ইরানে হামলার পর ইজরায়েলের আকাশপথ বন্ধ, যুদ্ধের আশঙ্কা

দীর্ঘ দুই দশক পর ফের সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল আমেরিকা। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইজরায়েল উত্তেজনার আবহে রবিবার ভোরে মার্কিন সেনা ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়।…

Post-Crash Safety Push: Government to Enforce Strict Height Limits Around Airports"

দীর্ঘ দুই দশক পর ফের সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল আমেরিকা। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইজরায়েল উত্তেজনার আবহে রবিবার ভোরে মার্কিন সেনা ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। এর পরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইরান হুঁশিয়ারি দেয়, এবং পাল্টা জবাবের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, আমেরিকার হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজেদের আকাশসীমা (Airspace) সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল।

কোথায় হামলা চালাল আমেরিকা?
এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনা—ইসফাহান, নাতাঞ্জ ও ফোর্দো। মার্কিন যুদ্ধবিমান থেকে অত্যাধুনিক GBU-57 ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বোমা ব্যবহার করা হয়। এই বোমা মাটির অনেক গভীরে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার পর বলেন, “এই পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত জরুরি এবং সফল। ইরান যাতে পরমাণু বোমা তৈরি করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”

   

ইরানের প্রতিক্রিয়া ও পাল্টা হুঁশিয়ারি
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং পারমাণবিক শক্তি দফতর এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। তেহরান জানিয়েছে, “এখন থেকে প্রতিটি আমেরিকান নাগরিক টার্গেট হবে।” তবে হামলার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তারা জানায়, যেসব পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা হয়েছে, সেখানে তেজস্ক্রিয়তার কোন প্রভাব নেই এবং সাধারণ নাগরিকরা সুরক্ষিত রয়েছেন।

ইজরায়েল বন্ধ করল আকাশপথ
মার্কিন হামলার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করে ইজরায়েলও দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, আপাতত কোনও বিমান ইজরায়েল প্রবেশ বা প্রস্থান করতে পারবে না। দেশের সব প্রধান এয়ারপোর্ট ও বেসামরিক বিমান চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা কতদিন চলবে, তা এখনও জানানো হয়নি।

Advertisements

ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই ঘটনার পরে মার্কিন প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, “এই সিদ্ধান্ত পশ্চিম এশিয়াকে আরও নিরাপদ করবে।” তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপই হয়তো পুরো অঞ্চলকে আরও অস্থির করে তুলবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও আশঙ্কা
বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। রাশিয়া, চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো দেশগুলো কী অবস্থান নেয়, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হলে তেল ও গ্যাসের দাম বিশ্ববাজারে হু-হু করে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মার্কিন হামলার পর ইরান এবং ইজরায়েল মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে তা গোটা পশ্চিম এশিয়াকে ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ইজরায়েলের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া এবং ইরানের উগ্র প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পরিস্থিতি খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।