সীমান্ত সংঘাতে বিরাম: যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হল আফগান-পাকিস্তান!

নয়াদিল্লি: রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘাতে দুই দেশের প্রায় ৫০ এরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর অবশেষে ৪৮ ঘন্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হল আফগানিস্তান (Afghanistan) ও পাকিস্তান (Pakistan)। বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) কার্যকর হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisements

পাকিস্তানের (Pakistan) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ঘোষিত এই যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য হলো অস্থিতিশীল সীমান্তে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের পর শত্রুতা কমানো এবং সংলাপের পথ খোলা। ইসলামাবাদ কর্তৃক ঘোষিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “জটিল কিন্তু সমাধানযোগ্য সমস্যা”-র “ইতিবাচক সমাধান” খোঁজার “আন্তরিক প্রচেষ্টা” করতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ।

প্রাণহানি রোধ করে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সংঘাতের নিষ্পত্তি চাইছে তালিবান ও ইসলামাবাদ বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবার ভোরে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশে তীব্র লড়াইয়ের পর এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।

আফগান কর্মকর্তারা জানান, পাকিস্তানি এয়ার স্ট্রাইকে স্পিন বোলদাক জেলার আবাসিক এলাকায় কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেইসঙ্গে নারী ও শিশু সহ আহতের সংখ্যা ১০০-র বেশি। তালিবান মুখপাত্র জাবিনুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “পাক-সেনার হামলায় একাধিক বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রায় ৮০ জন শিশু ও মহিলা।”

অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমে দুটি সীমান্ত ছাউনিতে হামলা করেছিল তালিবান। তাতে ছয়জন আধাসামরিক সেনার মৃত্যু হয়েছে। দুটি অঞ্চলের হাম্লাকেই প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবী ইসলামাবাদের। পাকিস্তান জানিয়েছে, পাল্টা আক্রমণে প্রায় ৩০ জন তালিবানি সেনাকে খতম করেছে পাক বাহিনী।

যুদ্ধ থামাতে কাতার ও সৌদির দ্বারস্থ হয় পাকিস্তান

Advertisements

দু-পক্ষের ভয়াবহ সীমান্ত সংঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় কাতার এবং সৌদি আরবের মধ্যস্থতা দাবী করে পাকিস্তান, বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তানি আধিকারিকদের বয়ান অনুযায়ী, ইসলামাবাদ বলে, “ঈশ্বরের দোহাই, আফগানদের যুদ্ধ বন্ধ করুন”।

বলা বাহুল্য, সম্প্রতি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে রিয়াধ এবং ইসলামাবাদ। চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তান ঘোষণা করে, কোনও একটি দেশের উপর আক্রমণ উচয় দেশের আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে”।

ভারতের সঙ্গে তালিবানের ঘনিষ্ঠতা বাড়তেই চাপের মুখে পাকিস্তান

সম্প্রতি তালিবান বিদেশ মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফর এবং পাকিস্তানকে করা হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরেই চাপের মুখে পড়েছে পাকিস্তান বলে মনে করা হচ্ছে। কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস পুনরায় চালু করার ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। ভারত-আফগান এই কূটনৈতিক পদক্ষেপকে পাকিস্তানের কাছে বড়সড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।