এক ডজনের বেশি খুন করেও খুনি নির্বিকার! তার ভ্রু কাঁপানো দৃষ্টিতে যেন নতুন শিকারের খোঁজ। কমপক্ষে ১৪ জন বন্ধুকে বিষ খাইয়ে খুন (Serial Killer) করেছে এক মহিলা।বিবিসি’র খবর খাবারের সঙ্গে সায়ানাইড মিশিয়ে ১৪ জনকে হত্যার দায়ে এক মহিলার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে থাইল্যান্ডের একটি আদালত। তার নাম সারারাত রংসিউথাপর্ন।
থাই পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে মিষ্টি কথা বলে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার পর খাবারের সঙ্গে ভয়ঙ্কর সায়ানাইড মিশিয়ে খুন করত সারারাত। কমপক্ষে ১৪ জনকে হত্যা করেছে। মৃতরা কেউ পুরুষ, কেউ নারী।
থাই পুলিশ জানিয়েছে, সারারাত নামে এই মহিলা খাবারে সায়ানাইড মিশিয়ে তার বান্ধবী সিরিপর্ন খানওংকে খুন করে। মৃতের ৪,৪০০ মার্কিন ডলারের বেশি সম্পদ নিজের নামে করে নেয়। সিরিপর্ন খানওংকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে গত বছর এপ্রিল মাসে সারারাত গ্রেপ্তার হয়। জানা গেছে সারারাতের স্বামী পুলিশে কাজ করতেন। বিচ্ছেদ হয়েছিল। তবে প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।
একই ধরনের কয়েকটি মৃত্যুর সঙ্গে সিরিপর্ন খানওংকের মৃত্যুর মিল পায় পুলিশ। একটি ভিডিওতে সিরিপর্নকে সারারাতের সঙ্গে দেখা যায়। শুরু হয় জেরা। তদন্তে উঠে আসে সারারাত নামে মহিলার সিরিয়াল কিলিং সূত্র।
সারারাত গ্রেপ্তার হওয়ার পর একজন মহিলা অভিযোগ করেন, কয়েক বছর আগে তাকেও বিষপ্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করেছিল সারারাত। ২০২০ সালের ওই ঘটনায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সেবার কোনোমতে তার জীবন রক্ষা পায়। শুনানির সময় সারারাত সাক্ষ্য দেয়নি। সারারাত তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এবং আপিল করার পরিকল্পনা করেছেন।
সায়ানাইড শরীরে প্রবেশ করলে তা অক্সিজেন কোষকে প্রভাবিত করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। সায়ানাইডের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট এবং বমি হওয়া। এই বিষের ছোট্ট একটি ডোজও মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আর পরিমাণ বেশি হলে মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। থাইল্যান্ডে বিষাক্ত এই পদার্থ ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রিত। অনুমোদন ছাড়া কেউ এটি কাছে রাখলে তার দুই বছরের জেল হতে পারে।