চিলি-আর্জেন্টিনায় ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্প, জোড়া আফটারশক

আজ চিলি এবং আর্জেন্টিনার দক্ষিণ উপকূলের কাছে ড্রেক প্যাসেজে ৭.৪ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প (Earthquake) আঘাত হেনেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল…

Earthquake Chile-Argentina Region

আজ চিলি এবং আর্জেন্টিনার দক্ষিণ উপকূলের কাছে ড্রেক প্যাসেজে ৭.৪ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প (Earthquake) আঘাত হেনেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল আর্জেন্টিনার তিয়েরা দেল ফুয়েগো প্রদেশের উশুয়াইয়া থেকে ২১৯ কিলোমিটার দক্ষিণে, ১০ কিলোমিটার গভীরতায়। এই ভূমিকম্পের পরপরই দুটি শক্তিশালী আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে, যা অঞ্চলটিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

ইউএসজিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৫৮ মিনিটে (ইউটিসি) আঘাত হানে। এর কিছুক্ষণ পরেই প্রথম আফটারশকটি ৭.১ মাত্রার রেকর্ড করা হয়, এবং পরবর্তীতে আরেকটি আফটারশকের খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করছে।

   

ভূমিকম্পের কারণে চিলির মাগালানেস উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল এবং বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও ইউএস ন্যাশনাল সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার এবং হাওয়াই ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের ফলে প্রশান্ত মহাসাগরে ব্যাপক সুনামির আশঙ্কা নেই। তবে, স্থানীয় সুনামির সম্ভাবনা এখনও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

আর্জেন্টিনা এবং চিলি উভয়ই প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অফ ফায়ার’-এ অবস্থিত, যেখানে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ ঘন ঘন ঘটে। এই অঞ্চলে অতীতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬০ সালে চিলিতে ৯.৫ মাত্রার ভূমিকম্প, যা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে রেকর্ড করা হয়, এবং ২০১০ সালে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫২৬ জনের মৃত্যু হয়।

এই ভূমিকম্পের কম্পন আর্জেন্টিনা এবং চিলির বিস্তৃত অঞ্চলে অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ পড়ার খবর পাওয়া গেছে। চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক জানিয়েছেন, তাঁর সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি বলেন, “আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে আমরা সতর্ক রয়েছি।”

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ধরনের ভূমিকম্পের পর আফটারশকগুলি কয়েক দিন, সপ্তাহ বা এমনকি বছর ধরে চলতে পারে। ইউএসজিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, আফটারশকগুলি সাধারণত প্রাথমিক ভূমিকম্পের তুলনায় কম শক্তিশালী হয়, তবে কখনও কখনও এগুলি সমান বা বেশি মাত্রার হতে পারে।

এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। উশুয়াইয়া এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও আফটারশকের সম্ভাবনা থাকায় সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অরুণাচল প্রদেশের মতো ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দারা এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হলেও, এই ভূমিকম্পের কোনো প্রভাব রাজ্যে পড়েনি। তবে, এই ঘটনা ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলগুলিতে প্রস্তুতি এবং সচেতনতার গুরুত্ব পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।