বঙ্গে মোদী সফরের আগেই মমতার হয়ে ব্যাট ধরলেন বিশ্বকাপ জয়ী অলরাউন্ডার

কীর্তি আজাদ যিনি ৮০ র দশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতেন বিশ্ব ত্রাস বোলারদের (Allrounder)। ছিলেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য। তখন তিনি ব্যাট ধরতেন…

Allrounder kirti backs mamata

কীর্তি আজাদ যিনি ৮০ র দশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতেন বিশ্ব ত্রাস বোলারদের (Allrounder)। ছিলেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য। তখন তিনি ব্যাট ধরতেন কপিলদেবের অধিনায়কত্বে। এই মুহূর্তে তিনি ব্যাটিং করছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অধিনায়কত্বে। আছে সংসদ পদ ও। এবার তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসছেন।

এই সফরে তিনি দুর্গাপুরে একটি বিজেপি সমাবেশে ভাষণ দেবেন এবং ৫,০০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করবেন। এই সফরের প্রাক্কালে তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) নেতা এবং সাংসদ কীর্তি আজাদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের জন্য তাঁর পরিকল্পনা স্পষ্ট করার কথা বলেছেন ।

   

কীর্তি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল দুর্গাপুরে আসছেন। আমি তাঁকে অনুরোধ করছি, তিনি পশ্চিমবঙ্গকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন এবং রাজ্যের জন্য তাঁর কী পরিকল্পনা, তা স্পষ্ট করুন। আগের সফরে তিনি কখনই পশ্চিমবঙ্গের জন্য তাঁর উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করেননি।”

তিনি আরও বলেন, তাঁর সাম্প্রতিক প্রেস বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর অদক্ষতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে, এবং তিনি আশা করেন মোদী এটি পড়বেন।প্রধানমন্ত্রীর সফর ও রাজনৈতিক তাৎপর্য২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কীর্তি আরও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী বাংলার জন্য কি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দেননি। দেননি বন্যাত্রাণের টাকাও। বরং দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হয়ে সুর মিলিয়ে তিনি বলেছেন মমতা বাংলার বাড়ি করে ২০ লক্ষ মানুষের মাথায় ছাদ দিয়েছেন। সুতরাং মোদীর এই সফর রাজনৈতিক এজেন্ডা ছাড়া আর কিছু নয়।

স্বভাবতই মোদীর এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ ২১ জুলাই তৃণমূলের শহীদ দিবস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমাবেশে রাজ্যের জনগণের কাছে তাঁর দলের বার্তা পৌঁছে দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রাক্কালে টিএমসি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উপর “লিঙ্গুইস্টিক প্রোফাইলিং” এবং “অবৈধ অভিবাসী” হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযোগ তুলেছে।

Advertisements

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকালের প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়ে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের অংশ নয়? বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, প্রমাণ করুন যে বাংলা ভাষাভাষী অভিবাসীরা রোহিঙ্গা।”

জনমনে প্রভাবপ্রধানমন্ত্রীর এই সফর রাজ্যের জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একদিকে, বিজেপি সমর্থকরা উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকে স্বাগত জানাচ্ছেন, অন্যদিকে টিএমসি’র সমর্থকরা এটিকে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে দেখছেন। এক্স-এ অনেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদের সমর্থনে মত প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ মোদীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রশংসা করেছেন।

UIDAI-এর উদ্যোগে ১.১৭ কোটি মৃত ব্যক্তির আধার বাতিল

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পশ্চিমবঙ্গ সফর এবং টিএমসি নেতা কীর্তি আজাদের বক্তব্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মোদীর সফরে উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন রাজ্যের জন্য বিজেপির প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।

তবে টিএমসি’র বাঙালি অভিবাসীদের হয়রানির অভিযোগ এই সফরকে বিতর্কিত করে তুলেছে। কীর্তি আজাদের আহ্বানের মাধ্যমে টিএমসি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার দাবি জানিয়েছে, যা আগামী নির্বাচনের রাজনৈতিক প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।