খড়্গপুর: দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের অন্তর্গত খড়্গপুর-বালেশ্বর (Kharagpur–Balasore) রেললাইনে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলবে আগামী ১০ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত। এই কাজের ফলে ওই লাইনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খড়্গপুর ডিভিশনের তরফে একটি সরকারি প্রেস বিবৃতি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ফলে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও ওড়িশা অভিমুখী যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ ও অসন্তোষ।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ১০ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চলবে লাইন রিনিউয়াল, সিগন্যাল সিস্টেম আপগ্রেড, পয়েন্ট চেঞ্জিং, ও ট্র্যাক সার্ভে-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণমূলক কাজ। এই কারণে খড়্গপুর-বালেশ্বর (Kharagpur–Balasore) লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হবে।
যে ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে:
বালেশ্বর-ভদ্রক-বালেশ্বর মেমু প্যাসেঞ্জার (68051/68052) – ১০ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন বাতিল।
সাঁতরাগাছি-পুরী স্পেশাল (02837) – বাতিল ১১ ও ১৮ জুলাই।
পুরী-সাঁতরাগাছি স্পেশাল (02838) – বাতিল ১২ ও ১৯ জুলাই।
শালিমার-পুরী স্পেশাল (02839) – বাতিল ১৩ ও ২০ জুলাই।
পুরী-শালিমার স্পেশাল (02840) – বাতিল ১৪ ও ২১ জুলাই।
খড়্গপুর-জাজপুর কেওনঝড় রোড এক্সপ্রেস (18037) – বাতিল ১৯ ও ২০ জুলাই।
জাজপুর কেওনঝড় রোড-খড়্গপুর এক্সপ্রেস (18038) – বাতিল ২০ ও ২১ জুলাই।
আংশিক যাত্রাপথে চলবে যেসব ট্রেন:
খড়্গপুর-ভদ্রক-খড়্গপুর মেমু প্যাসেঞ্জার (68049/68050) – ১০ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ট্রেনটি খড়্গপুরের পরিবর্তে বালেশ্বর থেকে ছাড়বে এবং ভদ্রক থেকে ফিরে এসে বালেশ্বরেই থামবে। অর্থাৎ, এই ট্রেন খড়্গপুর পর্যন্ত যাবে না।
এই সিদ্ধান্তে দুর্ভোগে পড়তে চলেছেন বহু নিত্যযাত্রী ও পর্যটক। পুরী যাত্রার মরশুমে এমন ট্রেন বাতিল বিশেষ করে বাঙালি ভক্তদের ভ্রমণ পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে চলেছে। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘আমরা আগেই ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলাম পুরী দর্শনের জন্য। এখন ট্রেন বাতিল হওয়ায় পুরো পরিকল্পনাই ভেস্তে যাচ্ছে।’’
দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, যাত্রীদের অসুবিধা হলেও এই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতে নির্বিঘ্ন ট্রেন চলাচল এবং যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রেল জানিয়েছে, বাতিল ট্রেনগুলির যাত্রীদের বিকল্প ট্রেন বা টাকা ফেরতের সুবিধা দেওয়া হবে নিয়ম অনুযায়ী।
যদিও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, যাত্রীদের বিশেষ করে অফিসযাত্রী ও ছোট ব্যবসায়ীদের কথা না ভেবে আচমকা এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, কমপক্ষে এক মাস আগে এই ঘোষণা করা উচিত ছিল যাতে যাত্রাপথ ও পরিকল্পনা বদলানো যায়।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানিয়েছে, ২২ জুলাইয়ের পর সমস্ত ট্রেন পরিষেবা আবার স্বাভাবিক হবে। তবে পরিস্থিতির উপর নজর রেখে কাজ শেষ করার চেষ্টা চালাবে তারা। আপাতত যাত্রীদের ধৈর্য ধরতে এবং রেলের আপডেটেড টাইমটেবিল দেখেই যাত্রা পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।