কলকাতা: সোমবার থেকেই রাজ্যে শুরু হতে চলেছে এক মৌসুমি পালাবদলের অধ্যায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরের বর্ষা এবার বিদায়ের পথে। রাজ্যের একাধিক অংশে বর্ষা বিদায়ের সব রকম অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
বিদায়ের পথে বর্ষা
মৌসম ভবনের সর্বশেষ বুলেটিন জানাচ্ছে, উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ থেকে ইতিমধ্যেই বর্ষা বিদায় নিয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, সিকিম, ওড়িশা, তেলঙ্গানা এবং পশ্চিমবঙ্গ। অর্থাৎ, সোমবার থেকেই বাংলা থেকে পাকাপাকি ভাবে বিদায় নিতে শুরু করবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বৃষ্টি।
তবে বিদায়ের আগে ঘূর্ণাবর্তের চোখরাঙানি এখনও পুরোপুরি কাটেনি। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে, যার প্রভাবে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়ে গেছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ারে মাঝারি কুয়াশা এবং বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাত হতে পারে। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গে সোমবার থেকে আকাশ থাকবে পরিষ্কার, বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে। মঙ্গলবার থেকে উত্তর ও দক্ষিণ— উভয় বাংলাতেই শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
শীত আসছে কবে ? West Bengal Monsoon Withdrawal
বাংলার আবহাওয়া অনুযায়ী, প্রকৃত শীত নামতে সাধারণত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। তবে অক্টোবরের শেষ ভাগ থেকেই হালকা শীতের আমেজ শুরু হয়। এই বছরও সেই ছবিই দেখা যাচ্ছে, সকাল ও সন্ধ্যায় সামান্য ঠান্ডা অনুভব করা যাচ্ছে একাধিক জেলায়। মাসের শেষের দিকে তাপমাত্রা আরও নামলে ঘন কুয়াশার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ইতিমধ্যেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে শীতের আগমনী বার্তা স্পষ্ট। কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে শুরু হয়েছে মৌসুমি তুষারপাত। কেদারনাথ থেকে গুলমার্গ, মানালি— সর্বত্র ধবধবে সাদা বরফের চাদর। সিকিমেও দেখা গেছে তুষারপাত। হাওয়া অফিসের ব্যাখ্যা, হঠাৎ করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার আগমণেই এই প্রাথমিক তুষারপাতের দৃশ্য, যদিও অক্টোবরের শুরুতে এমন প্রবণতা সচরাচর দেখা যায় না।
কোথায় তুষারপাত
এই তুষারপাতের জেরে দিল্লি, পঞ্জাব ও সংলগ্ন অঞ্চলে ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। চলতি বছর লা নিনার প্রভাবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনার কথাও জানাচ্ছে মৌসম ভবন। ফলে, বাংলাতেও এবার আগেভাগে নামতে পারে শীতের পরশ।
সব মিলিয়ে, বর্ষার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার আকাশে যেন বাজছে শীতের আগমনী সুর।