বর্তমানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গ, জলের তলায় সেতু, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ পরিষেবা

টানা বৃষ্টিতে (Rains) নাজেহাল পশ্চিমবঙ্গবাসী (West Bengal Citizens) । জানা যাচ্ছে যে বেশ কিছু জেলায় জল জমার পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে । কখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেছে…

টানা বৃষ্টিতে (Rains) নাজেহাল পশ্চিমবঙ্গবাসী (West Bengal Citizens) । জানা যাচ্ছে যে বেশ কিছু জেলায় জল জমার পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে । কখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেছে জল, কোথাও আবার জলের তলায় ডুবে রয়েছে সেতুর বিস্তীর্ন অংশ। বেশ কিছু গ্রামে ঠিকঠাক যোগাযোগ পরিষেবাও পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। টানা বৃষ্টির কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে অন্ডাল বিমানবন্দর। বাঁকুড়া সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রাম। পূর্ব বর্ধমানে বসথান ছেড়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় সতর্কতা স্বরূপ বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এই সব কারণেই ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ চান তাঁরা।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে জলের তলায় রয়েছে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের একটি অংশ। নদীর তীরে থাকা বাড়িগুলিতে জল ঢুকে গেছে। বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার জলে ডুবে রয়েছে বেশ কুচু এলাকায় । দুর্ঘটনা এড়াতে সাধারণ মানুষকে কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। বিদ্যুৎ দফতরের আঞ্চলিক ম্যানেজার বিশ্বজিৎ বাগদি সাধারণ মানুষকে বলেছেন যে কোনও পরিস্থিতেই যেন বিদ্যুতের খুঁটি বা তারে হাত না দেন তাঁরা।

   

এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেছেন, “বার বার প্রশাসনকে নদী ড্রেজিং করার কথা জানালেও তারা পদক্ষেপ করেনি। নদীর পার দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে।প্রশাসন পাপ করছে। আসানসোলের রেলপাড়-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় যে সব বাড়িতে জল ঢুকে যাচ্ছে, সেখানকার বাসিন্দারা কোথায় থাকবেন, কী খাবেন— এ সব ভাবেনি প্রশাসন। গাড়ুই নদী অবিলম্বে সংস্কার না করলে বিপদে পড়তে চলেছি আমরা।”

হুগলিতে বুধবার টানা বৃষ্টির ফলে জলের তলায় একাধিক নিচু এলাকা। এছাড়াও বেহাল অবস্থায় রয়েছে সড়ক। জল জমে থাকছে রাস্তার খানাখন্দে। স্কুলে যেতে একধিক সমস্যার সম্মুখীন পড়ুয়ারা। বিজেপির নেতারা , দাদপুরে রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানান। তাঁরা অভিযোগ করেছেন যে প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি মানুষের । পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের ঝুমি নদীতে বাড়ছে জলস্তর । জলস্রোতের বর্তমানে ভেঙে পড়েছে লোহার কাঠামোওয়ালা বাঁশের একটি সাঁকো। এর ফলেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে বেশ কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে ঘাটাল শহরের । নদী পারাপারের জন্য নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বীরভূমে বেহাল অবস্থায় চন্দ্রভাগা নদীর ওপর সেতু। এই সেতু পেরিয়ে দিয়েই সিউড়ি যাওয়ার প্রধান সড়কে পৌঁছতেন একধিক গ্রামের বাসিন্দারা। দূরে একটি বিকল্প সেতু থাকলেও সেটিও রয়েছে জলের তলায়। এই সবের ম্যাচে কপি নদীর জলসার বাড়ায় আতংকিত সাধারণ মানুষ। বোলপুরে গোয়ালপাড়া সেতুতে বর্তমানে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। যাতে সাধারণ মানুষ ঝুঁকির সঙ্গে সেতু না পার হন সেই দিকে নজর রাখছেন তাঁরা।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে যে বৃহস্পতিবারে ২৪ ঘন্টায় ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার সংযোগ করানো সড়কে রয়েছে দুটি সেতু , তবে বর্তমানে দুটোতেই জমেছে জল । এর ফলে বন্ধ রাখতে হয়েছে যান চলাচল। পূর্ব বর্ধমান জেলার পুর দপ্তরের অধীনে এলাকার সাতটি ওয়ার্ড জলমগ্ন। বেশ কিছু মানুষের ঠিকানা এখন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। পূর্ব বর্ধমানের নালা সংস্কারের দাবি জানিয়ে বাদশাহি রোড অবরোধ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

টানা বৃষ্টিতে নাজেহাল কৃষ্ণনগর। শহরের নিচু এলাকায় প্রবেশ করেছে বাড়তে থাকা ভাগীরথী নদীর জল । কোথাও রুয়েছে হাঁটুর সমান জল, কোথাও কোমর সমান জল। জল জমেছে নবদ্বীপ শহরেও। শান্তিপুর পুরসভা, রানাঘাট, চাকদহ এবং কল্যাণীর বেশ কিছু ওয়ার্ডও জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। কবে উদ্যোগ নেবে প্রশাসন? উত্তরের অপেক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দারা ।