মুর্শিদাবাদের সরকারি মঞ্চ থেকে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের (Anganwadi Workers) কাজে আরও প্রযুক্তিগত সুবিধা দিতে তাঁদের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা কর্মীদের মধ্যে খুশির সঞ্চার করেছে।
রাজ্যের তরফে আগেও বিভিন্ন প্রকল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের জন্য “তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্পের আওতায় ট্যাব বা স্মার্ট ফোন কেনার টাকা দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্য আশা কর্মীদেরও স্মার্ট ফোন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই আশা কর্মীদের হাতে স্মার্ট ফোন পৌঁছে যাবে। এবার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্যও একই সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রযুক্তি ব্যবহারে কর্মক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্য
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা গ্রামীণ স্তরে শিশুদের পুষ্টি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। তাদের কাজ আরও সহজ এবং কার্যকরী করতে স্মার্ট ফোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে কাজের মানোন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে তারা দ্রুত তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন, সরকারি নির্দেশিকা সময়মতো পৌঁছে যাবে এবং কাজের রিপোর্টিং আরও সহজ হবে।
কর্মীদের মতামত
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা অত্যন্ত খুশি। তাঁদের অনেকেরই মত, স্মার্ট ফোন পাওয়া গেলে ডেটা এন্ট্রি এবং রিপোর্ট জমা দেওয়ার কাজ সহজ হবে। অনেক সময় গ্রামীণ এলাকায় যোগাযোগের অসুবিধার কারণে তাঁদের কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হয়। স্মার্ট ফোনের সাহায্যে সেই সমস্যা দূর হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার
রাজ্য সরকার এর আগেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছে। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য “তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্প চালু করে রাজ্য সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়াও আশা কর্মীদের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দেওয়ার উদ্যোগ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করবে। এবার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্যও একই ধরনের সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্তে সরকারের প্রযুক্তি-নির্ভর কাজের পরিকল্পনা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় তথ্য জমা দেওয়া বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। স্মার্ট ফোন থাকলে এই সমস্যাগুলি অনেকটাই দূর হবে। পাশাপাশি, প্রযুক্তির ব্যবহারে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের স্মার্ট ফোন দেওয়ার প্রকল্প খুব শীঘ্রই চালু হবে। কর্মীদের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দেওয়ার পর আরও কীভাবে প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁদের কাজের মান উন্নত করা যায়, সে বিষয়েও পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে কাজ করা কর্মীদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিষেবার মান আরও বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রযুক্তি-নির্ভর এই উদ্যোগ সমাজের প্রান্তিক স্তরের মানুষের উপকারে আসবে এবং রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।