কলকাতা: রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়াতে আরও একবার বড় পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। বিধানসভা অধিবেশন (West Bengal Cabinet) শেষে নবান্নে অনুষ্ঠিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মোট ১৮টি নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাবে সিলমোহর পড়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, মৎস্য দফতর, অর্থ দফতর, নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর, স্বরাষ্ট্র দফতর এবং বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরে নতুন পদ তৈরি হবে। এছাড়াও, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরেও একাধিক নতুন পদ সৃষ্টির অনুমোদন মিলেছে। এই সিদ্ধান্তকে মমতা সরকারের তৃতীয় মেয়াদের অন্যতম বড় কর্মসংস্থানমুখী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।
বিস্তারিত জানা গিয়েছে, মৎস্য দফতরে তৈরি হবে ১টি নতুন পদ, অর্থ দফতরে ২টি নতুন পদ, নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরে ১টি পদ, স্বরাষ্ট্র দফতরে ২টি পদ অনুমোদিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ১২টি নতুন পদ তৈরি হবে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনও ঘোষণা করা না হলেও, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নতুন নিয়োগ সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা আরও দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে।
শুধুমাত্র নতুন পদ সৃষ্টিই নয়, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বড় সংখ্যক নার্স নিয়োগের প্রস্তাবও বৈঠকে গৃহীত হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজের গতি আনাই এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে নবান্ন সূত্র। বিশেষ করে গ্রামীণ ও জেলা স্তরের হাসপাতালগুলিতে নার্স এবং চিকিৎসাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হলে রোগীরা আরও উন্নত পরিষেবা পাবেন।
প্রশাসনিক মহলের মতে, এই পদক্ষেপ মমতা সরকারের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির নীতির অংশ। মুখ্যমন্ত্রী বহুবার জনসভা থেকে জানিয়েছেন, রাজ্যের যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে হবে। শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানতে ইতিমধ্যেই ‘সিনার্জি’ প্রকল্প শুরু করেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থ এবং সমাজকল্যাণমূলক দফতরে নতুন পদ অনুমোদন তারই ধারাবাহিকতা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃতীয় মেয়াদে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন আরও বেশি কর্মসংস্থানের দিকে জোর দিচ্ছে। সরকারি চাকরিতে নতুন পদ সৃষ্টির পাশাপাশি বিভিন্ন শূন্যপদ দ্রুত পূরণ করার জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে রাজ্যের বেকার যুবকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের পরিকাঠামো শক্তিশালী করা ছাড়াও, প্রশাসনিক দফতরগুলিতে দক্ষ জনবল বাড়ানো হলে সরকারি কাজ আরও স্বচ্ছ ও গতিময় হবে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের পরিষেবা পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।