BLA নিয়োগে তৃণমূল থার্ড, প্রথমে বিজেপি: কমিশনের তথ্যে চমক

West Bengal BLA Numbers TMC

পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যেই এবার নজরে এসেছে এক অপ্রত্যাশিত তথ্য: রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) সংখ্যা বিরোধী দলগুলোর তুলনায় কম। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের সবদলীয় BLA নিয়োগের চিত্র দাঁড়িয়েছে এভাবে:

Advertisements

বিজেপি (BLA-২) – ২৪,৮৫৮

   

সিপিএম – ১৮,৭০৬

তৃণমূল কংগ্রেস – ১৩,৫২৬

কংগ্রেস – ৫,৭৯৭

কেন পিছিয়ে পড়ল শাসকদল?

এই ফলাফলের পর রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে প্রশ্ন ওঠেছে, কেন শাসকদল নিজেই বুথ লেভেল এজেন্ট নিয়োগে পিছিয়ে পড়েছে? সাধারণত নির্বাচনের সময়ে বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে থাকে, শাসকদলের প্রভাবের কারণে তাদের বুথে এজেন্ট বসানো যায় না। কিন্তু এবারের তথ্য প্রকাশ করছে, শাসকদলই তুলনামূলকভাবে কম এজেন্ট দিতে পেরেছে।

এসআইআর-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ঠিক পরের দিন সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছিল, তারা BLA-২-এর তালিকা প্রকাশ করবে না। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিরোধীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে, তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেই সময় বিজেপির শীর্ষ নেতা শিশির বাজোরিয়া বলেন, “বিরোধী দলগুলোর কথা সবসময় শোনানো হয়, কিন্তু এবার শাসকদলেরই সংখ্যা কম।”

Advertisements

কঠোর বার্তা অভিষেকের

তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ভার্চুয়াল বৈঠকে BLA-২ দলের কাছে কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন, যাতে তারা BLA-১ দলের ছায়াসঙ্গী হিসেবে কার্যকর থাকেন। কিন্তু SIR-এর পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধি বা কার্যকারিতা শাসকদলের কাছে কম, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে চমক সৃষ্টি করেছে।

তৃণমূল মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস প্রত্যেকটি বুথে বিএলএ-২ নিযুক্ত করেছে। ফাইনাল কপি ৩ তারিখ রাতেই নির্বাচন কমিশনে জমা হয়েছে। আমরা সব সময় মনিটরিং করছি।”

চমকপ্রদ তথ্য

এই চিত্র শুধু একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক তথ্যই নয়। বরং এটি রাজ্য রাজনীতির গতি এবং নির্বাচনী প্রস্তুতির চিত্র তুলে ধরে, যেখানে শাসকদলের শক্তি, বিরোধী দলের সক্রিয়তা এবং বুথ পর্যায়ের নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সব দিক পরিলক্ষিত হচ্ছে।

নির্বাচনী বিশ্লেষকরা মনে করাচ্ছেন, SIR-এর এই ফলাফলের মাধ্যমে শাসকদলের জন্য ভোটার যোগাযোগ ও বুথ পর্যায়ের প্রস্তুতি আরও গুরুত্ব পেতে পারে, কারণ ভোটার তালিকার সঠিকতা এবং বুথে এজেন্ট উপস্থিতি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও ফলাফলের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।

এসআইআর প্রক্রিয়ার এই চমকপ্রদ তথ্য রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—শাসকদল কি শেষ মুহূর্তে নিজেদের এজেন্ট সংখ্যা বাড়াতে পারবে, নাকি বিরোধীরা এই সুযোগকে কাজে লাগাবে? রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের এই প্রক্রিয়া আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলবে, আর রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল ও টানাপোড়েন বজায় থাকবে।