কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ আরও বৃদ্ধি করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যের গণশিক্ষা সম্প্রসারণ ও গ্রন্থাগার পরিষেবা দফতর ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ‘সহানুভূতি’ বৃত্তির (Sahanubhuti scholarship 2025) জন্য আবেদন আহ্বান করেছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকা শিক্ষার্থীদের সাধারণ, কারিগরি এবং পেশাগত শিক্ষায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
নবম শ্রেণি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। ৪০ শতাংশ বা তার বেশি দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণতা, শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা বা অন্যান্য শারীরিক/মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকা শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অনুযায়ী বৃত্তি পাবেন। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীর আগের শিক্ষাবর্ষে ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন এবং পরিবারের বার্ষিক আয় দুই লক্ষ টাকার বেশি হলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
এই বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সরকারি বা স্বীকৃত সঙ্গীত, কারিগরি ও পেশাগত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানেও অধ্যয়নরত হতে পারেন। নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা মাসে ৩০০ টাকা পাবেন, এবং আবাসিক শিক্ষার্থীরা ৫০০ টাকা পাবেন। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা রিডারের ভাতা নির্ধারিত।
উচ্চশিক্ষায় বৃত্তির পরিমাণ ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাবে। উদাহরণস্বরূপ, পিএইচডি স্তরের দিবাভোগী শিক্ষার্থীরা মাসে ২৫,০০০ টাকা পাবেন, আবাসিক শিক্ষার্থীরা ২৬,০০০ টাকা পাবেন এবং অতিরিক্ত ২,০০০ টাকা রিডারের ভাতা দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, সহায়ক ভাতা এবং বছরে ২,০০০ টাকা করে বই, সরঞ্জাম বা শিক্ষাসামগ্রী কেনার জন্য অনুদানও দেওয়া হবে। তবে যারা ইতিমধ্যেই অন্য কোনও সরকারি বৃত্তি পাচ্ছেন, তারা এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন না।
আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর। শিক্ষার্থীদের আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট জেলার গণশিক্ষা সম্প্রসারণ আধিকারিকের দফতরে জমা দিতে হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আইএফএসসি কোড প্রদান আবশ্যক।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারবেন এবং সমাজের সঙ্গে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হতে পারবেন।
‘সহানুভূতি’ বৃত্তি এমন একটি উদ্যোগ যা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জীবনে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এবং তাদের শিক্ষাগত সাফল্যের পথকে আরও মসৃণ করবে।