জল চুরি আটকাতে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ‘জলস্বপ্ন প্রকল্পে’ বেনিয়ম এবং জল (water) চুরি (Theft) রোধে কড়া (strict) ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা করেছেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মমতা…

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ‘জলস্বপ্ন প্রকল্পে’ বেনিয়ম এবং জল (water) চুরি (Theft) রোধে কড়া (strict) ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা করেছেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রকল্পের কাজ শেষ না হলে এবং রিপোর্ট পেশ না করা পর্যন্ত কোনো ধরনের আগাম টাকা দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বজায় রাখার জন্য দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন।

রাজ্য সরকার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ ‘জলস্বপ্ন প্রকল্প’ হল রাজ্যের একটি মহতী উদ্যোগ, যার উদ্দেশ্য গ্রামাঞ্চলে পানি সরবরাহের উন্নতি ঘটানো এবং প্রতিটি গ্রামে পরিষ্কার, নিরাপদ পানির সুবিধা পৌঁছানো। কিন্তু এই প্রকল্পে সম্প্রতি একাধিক অনিয়ম এবং জল চুরি সংক্রান্ত অভিযোগ উঠে আসায়, প্রশাসন বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে।

   

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, কিছু ঠিকাদার এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রকল্পের বরাত বিতরণে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেননি। একাধিক ঠিকাদারকে একাধিক বরাত দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে এক ঠিকাদারকে একাধিক কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা নিয়মের পরিপন্থী। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো ক্ষুব্ধ এবং শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

রাজ্য সরকারের (West Bengal Government) এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রকল্পের শাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, রাজ্য প্রশাসন জানায় যে, জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ এবং রিপোর্ট পেশের প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘আমরা চাই প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হোক, যাতে গ্রামের মানুষ প্রকৃত সুবিধা পান। তবে, অনিয়ম বা দুর্নীতি কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না। যে কোনও প্রকল্পের প্রয়োগের আগে স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ তাঁর এই কঠোর অবস্থান রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, জলস্বপ্ন প্রকল্পের সাথে জড়িত ২৩ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে কোনও ধরনের অনিয়মের জন্য কেউ দায়মুক্ত থাকবে না। আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিয়েছি এবং তাদের আচরণে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।’’

এদিকে, ‘জলস্বপ্ন প্রকল্প’ পশ্চিমবঙ্গে গ্রামের উন্নয়নে এক উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ, যেখানে পানি সরবরাহের সমস্যা সমাধান করতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন ধরণের প্রযুক্তি এবং খনন পদ্ধতি ব্যবহার করছে। তবে, যদি এই প্রকল্পে কোনও ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়ম ঘটে, তবে তা গ্রামীণ জনগণের জন্য এক বিরাট ক্ষতি হতে পারে। এজন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতার পদক্ষেপ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

এভাবেই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের শাসনব্যবস্থা আরও শক্তিশালী এবং স্বচ্ছ হতে চলেছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য সরকারি প্রকল্পগুলিতে মডেল হয়ে উঠতে পারে।