শিশু নিগ্রহের রায়ে অসন্তুষ্ট, বিচারকদের বাড়িতেই হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা

আরজি করের ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মহিলারা এই নিয়ে সরব হয়েছেন।…

Diamond harbour court case

আরজি করের ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মহিলারা এই নিয়ে সরব হয়েছেন। তবে এবার নিরাপত্তার অভাব বোধ করতে দেখা গেল খোদ বিচারককে। ঠিক কী জানা যাচ্ছে? ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) সাব ডিভিশন কোর্টে বসেন এমন তিন বিচারক একটি অভিযোগ তুলে চিঠি লিখেছেন।

তাঁরা অভিযোগ তুলে জানিয়েছেন, গত ৮ তারিখ রাতে তাঁদের আবাসনে হানা দেয় কিছু দুষ্কৃতী। সেদিন দুষ্কৃতীদের কাছে প্রাণঘাতী অস্ত্র ছিল বলে চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সেই বিচারকরা। ডায়মন্ড হারবার কোর্টের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ এবং অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ ৪ নম্বরের স্বাক্ষর রয়েছে সেই চিঠিতে। সেই চিঠিতে তাঁরা আরও লিখে জানিয়েছেন, এদিন ক্যাম্পাসের বাইরে দুষ্কৃতীরা এসে ঘোরাঘুরি করতে থাকে।

   

এরপর প্রায় জোর করে আবাসিকদের ক্যাম্পাসে দুষ্কৃতীরা ঢোকার চেষ্টা করতেই সেখানে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের বাঁধা দেন। এই ঘটনাতে বিচারকরা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও সেই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। তবে শুধু এটাই নয়, এর পাশাপাশি সেই চিঠিতে বড়সড় অভিযোগও তুলেছেন সেই বিচারকরা। তাঁরা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, সেই দুষ্কৃতীদের মদত দিয়েছেন এক পুলিশ অফিসার।

মূলত, তাঁর জন্যই যে এই কান্ডটা ঘটেছে সেটা চিঠিতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারকরা। আর তাঁরা এই চিঠি দিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা জজকে। তিনি সেই চিঠি পাঠিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের দৃঢ় পদক্ষেপ হওয়া উচিত। কারণ, এটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। এতে বোঝা যায়, এ রাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। এটা খুব দুর্ভাগ্যের কথা।”

প্রসঙ্গত, জেলা জজকে এই চিঠি দেওয়ার পরেই উদ্যোগী হয়ে উঠেছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে। সেইসঙ্গে বিচারকদের আবাসনে নিরাপত্তা বাড়িয়ে গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বর্তমানে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালাচ্ছে। কিন্তু কীসের জন্য বিচারকদের আবাসনে এমন হামলা চালাল দুষ্কৃতী?

জানা যাচ্ছে, বিচারকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, শিশুদের যৌন নিগ্রহ মামলায় রায় পছন্দ না হওয়ায় এইরকম হামলা চালিয়েছে তাঁরা। মূলত, পকসোর একাধিক মামলায় রায় পক্ষে না হওয়ায় এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।