তৃণমূল পার্টি অফিসে মানসিক নির্যাতনে গৃহবধূর অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যা

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা (Chandrakona) ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নম্বর অঞ্চলের কৃষ্ণপুর গ্রামে একটি মর্মান্তিক ঘটনায় গৃহবধূ রোশনারা বিবি (স্বামী নাজিমুদ্দিন শেখ) অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যা…

Trinamool Party Office Accused of Mental Harassment Leading to Housewife’s Acid Suicide in Chandrakona

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা (Chandrakona) ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নম্বর অঞ্চলের কৃষ্ণপুর গ্রামে একটি মর্মান্তিক ঘটনায় গৃহবধূ রোশনারা বিবি (স্বামী নাজিমুদ্দিন শেখ) অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় পার্টি অফিসে ডেকে তাঁকে অমানবিক মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল, যা তাঁকে এই চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। ঘটনাটি পারিবারিক শত্রুতা ও অশান্তির জেরে শুরু হয়। অভিযোগ, শাসকদলের নেতারা রোশনারা বিবির পরিবারের কাছে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। টাকা দিতে না পারায় তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করা হয় বলে পরিবার জানিয়েছে।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, পারিবারিক গন্ডগোল নিয়ে রোশনারা বিবি তৃণমূলের অঞ্চল পার্টি অফিসে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁকে সমাধান দেওয়ার পরিবর্তে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁর উপর শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। অভিযোগে বলা হয়েছে, শাসকদলের নেতারা তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং অপমানজনক আচরণ করেন। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে রোশনারা বিবি বাড়ি ফিরে কার্বাইড অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তাঁকে প্রথমে ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং পরে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়, এবং পরে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

   

এই ঘটনায় গোটা কৃষ্ণপুর গ্রামে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার পর অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে চন্দ্রকোনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, তবে এখনও কোনো গ্রেপ্তারির খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা এই ঘটনাকে শাসকদলের দৌরাত্ম্যের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

Advertisements

এই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে। সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে, এবং অনেকে এই ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন। এই ঘটনা কার্সিয়াংয়ের ভিক্টোরিয়ান কবরস্থানের মতো ঐতিহাসিক স্থানের রহস্যের সঙ্গে তুলনা করা যায় না, তবে এটি সমাজে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। ন্যায়বিচার এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে গ্রামবাসী এবং রোশনারা বিবির পরিবার একত্রিত হয়েছেন।