আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের অভিযোগে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য গ্রেপ্তার

মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর থানার পারশোভাপুর এলাকা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল রসিদকে আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের (Arms Smuggling in Malda) অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে নিউ…

Arms Smuggling in Malda

মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর থানার পারশোভাপুর এলাকা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল রসিদকে আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের (Arms Smuggling in Malda) অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে নিউ ফরাক্কা জিআরপি। শনিবার রাতে এই গ্রেপ্তারির ঘটনা ঘটে। রেল পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ অক্টোবর দুপুরে নিউ ফরাক্কা রেল সাবওয়ে থেকে তৌসিফ আলি নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় দুটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং চারটি ম্যাগাজিন। এরপর তৌসিফকে আদালতে পাঠানো হয় এবং তার সঙ্গে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।

জেরা চলাকালীন বেরিয়ে আসে আসল কাহিনী, যার ভিত্তিতে আব্দুল রসিদ নামের এই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের নাম উঠে আসে। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল রসিদ একটি বড় চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যারা বাংলাদেশের এক ব্যক্তির কাছে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করছিল। এই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশে অবৈধ অস্ত্র পাচারের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বিক্রি করতে চেয়েছিল।

   

পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্রগুলির মেরামতের জন্য তৌসিফ আলিকে বিহারের আরারা পাঠানো হয়েছিল, যেখানে অস্ত্রের মেরামত করে তা পাচারের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মুলপান্ডা তথা মালদার পারশোভাপুর এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল রসিদের যোগসূত্রে এই অস্ত্র পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গ্রেপ্তারির পর আব্দুল রসিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তবে তার কাছ থেকে এই চক্রের আরও সদস্যদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে, গ্রেপ্তারের পর রবিবার তাকে জঙ্গীপুর মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়, যেখানে নিউ ফরাক্কা জিআরপি সাত দিনের পুলিশ হেপাজতের আবেদন জানিয়েছে। এই ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার আব্দুল রসিদ তৃণমূলের রাজনীতি থেকে জড়িত থাকা সত্ত্বেও, তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এখন এই মামলাটি নিয়ে রেল পুলিশ ও জেলা পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে, এবং আরও বেশ কয়েকটি তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা বিশ্বাস করছে, এই চক্রের আরও সদস্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সক্রিয় থাকতে পারে এবং এর সঙ্গে আরও কিছু বেআইনি অস্ত্র পাচার চক্রের সংযোগ থাকতে পারে।

অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে যে, রেল পুলিশের এই সাফল্য কোনও একক ঘটনা নয়, বরং এটি পুলিশ প্রশাসনের দক্ষতারই ফলাফল। আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের মতো চরম অপরাধমূলক কার্যকলাপ মোকাবিলায় পুলিশ আগের চেয়ে আরও কঠোর এবং মনিটরিং বাড়িয়েছে, যাতে আগামীতে এই ধরনের অপরাধ রোধ করা সম্ভব হয়।

এই ঘটনায় প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মধ্যেও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ আশা প্রকাশ করেছেন যে, প্রশাসন এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো ধরনের অবৈধ অস্ত্র বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি না পায়।

এদিকে, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে এ ধরনের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তির ক্ষতি হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তৃণমূল কংগ্রেস দলের নেতৃত্ব এই বিষয়ে কিছুই জানায়নি।

এই ঘটনায় পুলিশ আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং আশা করা হচ্ছে যে, আসল চক্রের সদস্যদের সনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।