দাগি তালিকায় তৃণমূল নেতার স্ত্রী! আছে বিধায়ক কন্যাও

কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রকাশিত হবে SSC কাণ্ডে অযোগ্যদের তালিকা (Trinamool)। খবর পাওয়া গেছে যে এই তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নাম রয়েছে। সূত্রের খবর, তালিকায়…

Trinamool scam

কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রকাশিত হবে SSC কাণ্ডে অযোগ্যদের তালিকা (Trinamool)। খবর পাওয়া গেছে যে এই তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নাম রয়েছে। সূত্রের খবর, তালিকায় একজন বিধায়কের কন্যা, তৃণমূল নেতার স্ত্রী এবং একজন অঞ্চল সভাপতির ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, কারণ এই কেলেঙ্কারি তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য ইতিমধ্যেই একটি বড় বিব্রতকর ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (ডব্লিউবিএসএসসি) কর্তৃক পরিচালিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্ট গত বছর এই নিয়োগ প্যানেল বাতিল করে এবং ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল করে দেয়।

   

এই রায় সুপ্রিম কোর্টেও বহাল থাকে, যা তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে তৃণমূলের শীর্ষ নেতা ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার হয়েছেন। এবার নতুন করে যে তালিকা প্রকাশিত হতে চলেছে, তাতে আরও কিছু তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নাম প্রকাশ পাওয়ায় দলের অস্বস্তি আরও বাড়ছে।

সূত্রের খবর, অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকায় একজন তৃণমূল বিধায়কের কন্যার নাম রয়েছে, যিনি নাকি এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন। এছাড়া, তৃণমূল নেতার স্ত্রী এবং একজন অঞ্চল সভাপতির ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নামও এই তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে। এই ব্যক্তিরা নাকি ঘুষের বিনিময়ে বা ওএমআর শিটে কারচুপির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই তালিকা প্রকাশের জন্য ডব্লিউবিএসএসসি প্রস্তুতি নিচ্ছে, এবং এই তালিকা প্রকাশিত হলে তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে। এই কেলেঙ্কারির তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) যৌথভাবে কাজ করছে।

ইডি ইতিমধ্যে জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি এবং তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে। মায়া সাহা দাবি করেছেন যে তিনি এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত নন এবং তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনো দুর্নীতির টাকা জমা পড়েনি।

তবে, ইডি সূত্রে জানা গেছে, জীবনকৃষ্ণ সাহার স্ত্রী তাগোরি সাহার অ্যাকাউন্টে ২৬ লক্ষ টাকা এবং তার বাবার অ্যাকাউন্টে ২০ লক্ষ টাকা স্থানান্তরিত হয়েছিল, যা এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

Advertisements

এই তালিকা প্রকাশিত হলে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে ইতিমধ্যে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী তাদের চাকরি হারিয়েছেন। এই তালিকায় নতুন করে যেসব নাম উঠে আসছে, তাদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।

এই ঘটনা তৃণমূলের জন্য রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার কথা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি “মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে” এই রায় মেনে নিতে পারেন না।

তিনি একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে মুখ্য সচিব, শিক্ষা সচিব এবং আইনি বিশেষজ্ঞরা, যারা যোগ্য প্রার্থীদের সুরক্ষা দেওয়ার উপায় খুঁজবে। তবে, বিরোধীরা দাবি করছে যে তৃণমূল সরকার অযোগ্য প্রার্থীদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে।

ISRO-NASA-র বড় সাফল্য! এই স্যাটেলাইট পৃথিবীর প্রতিটি কোণে নজর রাখবে

এই তালিকা প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেসের উপর চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা তৃণমূলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ এটি দলের দুর্নীতির ইমেজকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। আগামী দিনে এই তালিকা এবং তদন্তের ফলাফল রাজ্যের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।