TMCP র প্রতিষ্ঠা দিবসে রাখা যাবে না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরীক্ষা (Kolkata University)। বদলে ফেলতে হবে সূচি। সেই মর্মেই শিক্ষামন্ত্রীর তরফ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে। রাজনৈতিক বিতর্ক আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। এবার এই ইসুকেই কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে কার্যত তুলোধোনা করলেন রাজ্যসরকারকে।
তিনি সরাসরি কোনো রাখ ঢাক না করেই মমতা বন্দোপাধ্যায় কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে তিনি যদি ছাত্র পরিষদের ছেলেদের ডেকে বোঝাতেন যে প্রতিষ্ঠা দিবসের থেকে বেশি প্রয়োজন হল শিক্ষা তাহলে সেটা মুখ্যমন্ত্রী সুলভ কাজ হত। তিনি আরও বলেছেন যে ছাত্র পরিষদ থেকে তৈরী হচ্ছে অসংস্কৃতিক ছেলে মেয়েরা।
তাদের নামে প্রশাসনে বিভিন্ন অভিযোগ। তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের ছেলেদের গ্যাং ডাকাত, গ্যাং রেপিস্ট বা গ্যাং বদমাইশ বলেও উল্লেখ করতে ছাড়েননি। উপাচার্য স্পষ্ট বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো এই ঘটনাকে সমর্থন না করে তার প্রতিবাদ করলে তার ই ভাবমূর্তি ভালো হতে পারত। কিন্তু তা না করে খোদ শিক্ষামন্ত্রীর দফতর থেকে উপাচার্যের কাছে চিঠি পাঠানো হল পরীক্ষার সূচি বদল করার জন্য।
এই ঘটনা শুধু উপাচার্যকে নয় প্রভাব ফেলেছে সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষিত সমাজেও। শুরু হয়েছে সমালোচনা এবং রাজনৈতিক চাপানউতোর। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, যে ছাত্রপরিষদ তৈরী হয়েছিল ১৯৫৪ সালের ২৮ অগাস্ট এবং যে দুজন মানুষের হাত ধরে তা গড়ে উঠেছিল তারা দুজনেই নমস্য।
ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় এবং অতুল্য ঘোষের স্মৃতি বিজড়িত এই ছাত্রপরিষদের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে আজকের রাজনৈতিকরা। আবার অনেকে বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা এতটাই ঠুনকো হয়ে গিয়েছে যে আজ দলীয় কর্মকান্ড শিক্ষার থেকে বড় হয়ে গিয়েছে। সমোলোচকদের একাংশের মতে রাজ্যে সরকারি স্কুলগুলির যা অবস্থা তাতে এখনকার বাবা মায়েরা সাহস করে সরকারি স্কুলে পাঠাতে ভয় পান।
স্কুলে শিক্ষক নেই পড়াশুনোর হাল বেহাল। কলেজে ক্লাস হয়না এবং সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা এবং TMCPর প্রতিষ্ঠা দিবস নিয়ে শুরু হওয়া চাপানউতোর কি আবারও প্রমান করে দিচ্ছে শিক্ষার থেকে রাজনীতি বড়। কালজয়ী ছায়াছবি ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিতে রাজা চাননি রাজ্যের যুব সমাজ শিক্ষিত হোক।
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পে মন্ত্রী শিউলি সাহা
কারণ যুবসমাজ শিক্ষিত হলে কারচুপি করা যায়না। ধরা পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়। পরীক্ষা এবং রাজনৈতিক এজেন্ডা নিয়ে চলা চাপানউতোর কি এই ছবির একটি বাস্তবিক প্রতিফলন। যদি তাই হয় তবে অনায়াসে বলা যায় যে বাংলার শিক্ষার মেরুদন্ড ভেঙে পড়তে আর বেশি সময় লাগবে না।