আসানসোল দক্ষিণ থানার সাতাইশা মোড়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার চারজনের মধ্যে একজনকে ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম সরবন মণ্ডল হলেন কুলটির যুব তৃণমূল নেতা (TMC Youth Leader Arrested)। যদিও এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার বিকেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি চালের দোকানের দুই কর্মী ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় সাতাইশা মোড়ে তাঁদের পথ আটকায় একদল দুষ্কৃতী। তাঁদের কাছ থেকে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা ছিনতাই করা হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে করে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়।
খবর পেয়েই তদন্তে নামে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ও স্থানীয় সূত্রের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালায়। এরপর রবিবার চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’লক্ষ টাকা নগদ, একটি অগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি মোটরবাইক।
গ্রেফতারদের মধ্যে অন্যতম সরবন মণ্ডলকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বিজেপির অভিযোগ, সরবন মণ্ডল একজন সক্রিয় যুব তৃণমূল নেতা এবং কুলটি অঞ্চলে তার ভালো প্রভাব রয়েছে। বিজেপি দাবি করেছে, “এই ঘটনা প্রমাণ করে, তৃণমূল কংগ্রেসের আশ্রয়ে দুষ্কৃতীরা আজ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সরাসরি অপরাধে জড়িত।”
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “সরবন মণ্ডল নামক কোনো ব্যক্তি আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। বিজেপি ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের অতীতেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার রেকর্ড রয়েছে। পুলিশের দাবি, তদন্তে আরও চক্রধরের হদিস মিলতে পারে।
এই ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, নিরাপত্তার প্রশ্নে এই ধরনের ঘটনায় প্রশাসনের কী ভূমিকা? পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের আদালতে তোলা হবে এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আসানসোল দক্ষিণ থানার এক আধিকারিক বলেন, “ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে ধরা হয়েছে। আরও কারা যুক্ত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া টাকা ও অস্ত্র ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হবে।”
এই ঘটনা ঘিরে আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতিতে তরজা আরও চড়তে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে এই সংঘাত আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের আগে আরও তীব্র হতে পারে।