ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া ব্লক) নেতারা আগামী ১৮ আগস্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে (Vice President) মিলিত হতে চলেছেন, যেখানে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে ইন্ডিয়া ব্লকের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দিতে নারাজ।
এই বৈঠকটি উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী নির্বাচনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ হবে, যা জগদীপ ধনখড়ের হঠাৎ পদত্যাগের পর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
ইন্ডিয়া ব্লকের নেতারা এর আগে ৮ আগস্ট লোকসভার বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধীর বাসভবনে একটি বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। সেই বৈঠকে বিহারের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, ইন্ডিয়া ব্লক এই নির্বাচনে একটি যৌথ প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ক্ষেত্রে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ’র তুলনায় তারা পিছিয়ে রয়েছে। ইন্ডিয়া ব্লকের নেতারা মনে করেন, জয়ের সম্ভাবনা কম হলেও এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রাজনৈতিকভাবে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে।
মল্লিকার্জুন খড়গে ইন্ডিয়া ব্লকের শরিক দলগুলির সঙ্গে একটি সম্মতিসূচক প্রার্থী নির্বাচনের জন্য আলোচনা চালাচ্ছেন। সূত্র জানায়, ইন্ডিয়া ব্লক এবার কংগ্রেসের বাইরে থেকে একজন প্রার্থী মনোনয়নের পরিকল্পনা করছে, যাতে সমস্ত বিরোধী দলের ঐক্য বজায় থাকেন।
গত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থন করেনি, যা বিরোধীদের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছিল। এই ভুল এড়াতে এবার একজন নিরপেক্ষ বা অ-কংগ্রেস প্রার্থী নির্বাচনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে, যিনি সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্টে বলা হয়েছে, মল্লিকার্জুন খড়গে ইন্ডিয়া ব্লকের নেতাদের সঙ্গে প্রার্থী নির্বাচনের জন্য আলোচনা তীব্র করেছেন। একটি পোস্টে বলা হয়, “ইন্ডিয়া ব্লক উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি যৌথ প্রার্থী দেবে।
খড়গে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সম্মতি গড়ে তুলতে কাজ করছেন।” তবে, তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) নিজেদের প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছে, এবং বামপন্থী দলগুলি টিএমসি’র প্রার্থীকে সমর্থন করবে না বলে জানা গেছে।
সংসদের উভয় কক্ষে মোট ৭৮২ জন সদস্য রয়েছেন, এবং জয়ের জন্য প্রার্থীকে ৩৯২টি ভোট প্রয়োজন। এনডিএ’র কাছে লোকসভায় ২৯৩ এবং রাজ্যসভায় প্রায় ১৩০ জন সদস্যের সমর্থন রয়েছে, যা মোট ৪২৩টি ভোট।
অন্যদিকে, ইন্ডিয়া ব্লকের কাছে লোকসভায় ২৩৪ এবং রাজ্যসভায় ৭৯টি ভোট রয়েছে, মোট ৩১৩টি। এই সংখ্যাগত ব্যবধান সত্ত্বেও, ইন্ডিয়া ব্লক সংবিধানের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়।
১৮ আগস্টের বৈঠকে উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী নির্বাচন ছাড়াও বিহারের এসআইআর নিয়ে চলমান বিতর্ক এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ইন্ডিয়া ব্লক বিহারে ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে, যাকে তারা ‘ভোট চুরি’ হিসেবে অভিহিত করছে। রাহুল গান্ধী এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বচ্ছতা দাবি করেছেন।
ইন্ডিয়া ব্লকের ১৮ আগস্টের বৈঠক উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। মল্লিকার্জুন খাড়গের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলি সংবিধান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রকাশ করতে চায়।
কোহিনুর চা বাগানে তালাবন্ধ বিক্ষোভ, শ্রমিকদের দাবি—‘মালিক নেই, বকেয়া মিটুক’
যদিও সংখ্যাগতভাবে তারা পিছিয়ে, তবুও এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই বৈঠক বিরোধী ঐক্যকে আরও জোরদার করবে এবং আগামী দিনে তাদের কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।