২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের লক্ষ্য উত্তরবঙ্গ থেকে রেকর্ড জমায়েত

কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজনৈতিক বার্ষিক কর্মসূচি ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশ (July 21 Mega Rally)। এবছরের সমাবেশে বিশেষ নজর উত্তরবঙ্গের দিকে। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের জমিতে…

Congress Expels Shankar Malakar from All Posts Amid TMC Defection Buzz

কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজনৈতিক বার্ষিক কর্মসূচি ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশ (July 21 Mega Rally)। এবছরের সমাবেশে বিশেষ নজর উত্তরবঙ্গের দিকে। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের জমিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে তৃণমূল। কোচবিহার লোকসভা আসন জয় ছাড়াও মালদহ, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরসহ একাধিক জেলায় গেরুয়া শিবিরের থেকে ব্যবধান অনেকটাই কমিয়েছে তারা। তাই এবারের শহিদ দিবস উপলক্ষে উত্তরবঙ্গ থেকে রেকর্ড সংখ্যায় কর্মী ও সমর্থক আনা হচ্ছে ধর্মতলায়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ জয় করাই দলের ‘পাখির চোখ’। কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রকে টার্গেট করছে তৃণমূল। সেই লক্ষ্যেই পাহাড় ও চা বলয় এলাকা থেকে ব্লকভিত্তিক কর্মী সমাবেশ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চা শ্রমিক, রাজবংশী সম্প্রদায়, সংখ্যালঘু অঞ্চল—প্রত্যেকটি অঞ্চল থেকে ট্রেন ও বাস ভরতি করে ধর্মতলায় আনার পরিকল্পনা। তৃণমূল দাবি করেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে উত্তরবঙ্গ থেকে দ্বিগুণ কর্মী অংশগ্রহণ করবেন।

   

শুধু রাজনৈতিক কর্মীই নন, পাহাড়ি মিত্রদল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতারাও অংশ নেবেন সমাবেশে। অনীত থাপার নেতৃত্বাধীন এই দল পঞ্চায়েত ভোটে পাহাড়ে ভালো ফল করেছে এবং তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী হিসেবে উঠে এসেছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদও এখন চা বলয় অঞ্চল থেকে, যা ইঙ্গিত দেয় উত্তরবঙ্গে দল কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে।

অন্যদিকে বিজেপিও বসে নেই। সমাবেশের দিনেই উত্তরকন্যা অভিযান ডেকেছে তারা। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সভা হয়েছে আলিপুরদুয়ার চা বলয় অঞ্চলে। তাই উত্তরের জমি দখলের লড়াই ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। সাংগঠনিক শক্তিতে উত্তরবঙ্গে বিজেপিও সমানে টক্কর দিচ্ছে।

Advertisements

এই অবস্থায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশকে ঘিরে প্রস্তুতিও নজরকাড়া। ধর্মতলায় মঞ্চ তৈরির কাজ পুরোদমে চলছে। এবারে মূল সভামঞ্চ ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তৈরি হচ্ছে তিনটি স্তরে। তিনটি মঞ্চই যথাক্রমে ১১, ১২, ১৩ ফুট উচ্চতায়, দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ৮০ ও ৪২ ফুট। প্রায় ৬০০ জন বসার সুবিধাযুক্ত মঞ্চে থাকবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রথম সারির নেতৃত্ব, আমন্ত্রিত অতিথি ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা। তৃতীয় মঞ্চে থাকবেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

সমাবেশ সম্প্রচারের জন্য শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসানো হচ্ছে ১৫টির বেশি জায়ান্ট স্ক্রিন। থাকছে প্রায় ১০০০ স্বেচ্ছাসেবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকবে লাইভ সম্প্রচার। খোলা মঞ্চে সমাবেশ হলেও আবহাওয়ার প্রতিকূলতা ঠেকাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।

সবমিলিয়ে এবারের ২১ জুলাই শুধুই একটি বার্ষিক রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়, বরং ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গ দখলের রণকৌশলেরই মহড়া বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন দেখার, উত্তরের জমি কার দিকে ঝুঁকে থাকে এই মহাসমাবেশের পর।