বাংলাপক্ষর নিশানায় তৃণমূল সাংসদ

আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC) নিয়ে প্রশংসা করার পাশাপাশি তিনি দেশের সর্বত্র আমিষ নিষিদ্ধ…

TMC MP Shatrughan Sinha's Controversial Remarks on UCC

short-samachar

আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC) নিয়ে প্রশংসা করার পাশাপাশি তিনি দেশের সর্বত্র আমিষ নিষিদ্ধ করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তাঁর এই মন্তব্যে সরব হয়েছে বাংলাপক্ষ। সংগঠনের নেতা কৌশিক মাইতি কড়া ভাষায় তোপ দেগে বলেছেন, “তৃণমূলের গুটখা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা চায় মাছ-মাংস নিষিদ্ধ হোক! তৃণমূল কি বহিষ্কার করবে না এই গুটখার বাচ্চাকে? নাকি মাছ-মাংস নিষিদ্ধ করাই তৃণমূলের পার্টি লাইন?”

   

কী বলেছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা?
বর্ষীয়ান অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ শত্রুঘ্ন সিনহা সম্প্রতি উত্তরাখণ্ড সরকারের UCC বাস্তবায়নকে সমর্থন করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, এই আইন সারা দেশে কার্যকর করতে গেলে নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা আসবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি গরুর মাংস নিষিদ্ধকরণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গরুর মাংস দেশের অনেক জায়গায় নিষিদ্ধ, কিন্তু কিছু এলাকায় অনুমোদিত। আমি মনে করি, শুধু গরু নয়, সারা দেশে মাংস খাওয়া বন্ধ করা উচিত।”

তাঁর এই মন্তব্যে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে মাছ-মাংস খাদ্যসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, সেখানে তাঁর এই বক্তব্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

বাংলাপক্ষের প্রতিক্রিয়া
বাংলাপক্ষ বরাবরই বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাস রক্ষার দাবিতে সরব। শত্রুঘ্ন সিনহার বক্তব্যকে বাংলার সংস্কৃতির উপর আক্রমণ বলে মনে করছে সংগঠনটি। কৌশিক মাইতি বলেন, “এ রাজ্যে তৃণমূলের নেতারাই যদি এমন মন্তব্য করেন, তাহলে বুঝতে হবে, বাংলা ও বাঙালির স্বার্থ রক্ষায় তারা মোটেও আন্তরিক নয়।”

তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল কি এবার আমিষ নিষিদ্ধ করার নীতিতেই হাঁটবে? বাংলার মানুষের রোজকার খাবার নিয়ে এ ধরনের মন্তব্যকে বাংলাপক্ষ কিছুতেই মেনে নেবে না।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
শত্রুঘ্ন সিনহার মন্তব্য নিয়ে বিরোধী দলগুলিও সরব হয়েছে। বিজেপির তরফ থেকে বলা হয়েছে, “তৃণমূলের একাংশ এখনই হিন্দুত্বের লাইনে হাঁটতে চাইছে, তাই এমন মন্তব্য করছেন শত্রুঘ্ন সিনহা।” আবার সিপিএম নেতারা বলছেন, “বাংলার রাজনীতিতে বহিরাগতদের আমদানি করলে এমনটাই হয়।”

তৃণমূল কী বলছে?
তৃণমূলের তরফে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে দলের একাংশ মনে করছে, শত্রুঘ্ন সিনহার মন্তব্য সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং এটি দলের অবস্থান নয়। কিন্তু বাংলাপক্ষের মতো সংগঠনের তীব্র সমালোচনার পর, দল কী অবস্থান নেয়, সেটাই দেখার।

বাংলার রাজনীতিতে খাদ্যাভ্যাসের বিষয়টি নতুন বিতর্ক নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় বাংলার খাবার-সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে শত্রুঘ্ন সিনহার এই বক্তব্যে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়তে পারে। বাংলার আবেগ ও খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা সহজ নয়, আর সেই কারণেই বাংলাপক্ষের মতো সংগঠন এখন সরব হয়ে উঠেছে।