শুভেন্দুর গড়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান দিয়ে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ দেবের?

ভোটে জিতেই এবার নতুন উদ্যেমে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন অভিনেতা সাংসদ দেব। দীর্ঘদিন ধরে টাল বাহানায় আটকে থাকা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকেই এবার পাখির চোখ করতে চাইছেন…

dev-mamata

ভোটে জিতেই এবার নতুন উদ্যেমে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন অভিনেতা সাংসদ দেব। দীর্ঘদিন ধরে টাল বাহানায় আটকে থাকা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকেই এবার পাখির চোখ করতে চাইছেন তৃণমূলের জয়ী সাংসদ দীপক অধিকারী। সেই বিষয় আলোচনা করতে রাজ্যের সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

বুধবার তাঁর দফতরে পৌঁছন টলিউড সুপারস্টার। সেখানেই দীর্ঘক্ষণ বৈঠক চলে তাঁদের। সেখানে রাজ্যের উদ্যগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকে বাস্তবায়িত করার জন্য কী কী করণীয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত কথা হয় দুজনের। যত দ্রুত সম্ভব ঘাটার মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করার ব্যাপারে দুজনেই সম্মত হয়েছেন।

   

আগামী জুলাই মাসেই রাজ্য সেচ দফতরের তরফে হাতে-কলমে কাজ শুরুর কথা জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে,আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঘাটালে পৌঁছে যাবে ইঞ্জিনিয়ারেরা। শুরু হবে খোড়খুঁড়ির কাজ। তবে তার আগে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি ম্যাপ প্রকাশ করা হবে। কোথায় কোথায় বাজার কিংবা বসতি এলাকা রয়েছে, সেগুলিও চিহ্নিত করতে হবে ম্যাপের মাধ্যমে। তারপর খাল কাটার কাজ শুরু করবেন সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা।

এবার লোকসভা ভোটে দাঁড়ানোর আগে লাল ফিতের ফাঁসে আটকে থাকা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। বিপুল ভোটে জয়ের পর পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হয়েই এবার সেই প্রতিশ্রুতিকে রাখতে উদ্যেগী হলেন তিনি এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল একটি বন্যাপ্রবণ এলাকা। শিলাবতী নদী এই শহরকে দুভাগে বিভক্ত করেছে। শিলাবতী ও কংসাবতী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত হওয়ায় শহরটি বর্ষাকালে অধিকাংশ সময়ই জলে ডুবে থাকে। পরে জল নামলেও পলি মাটির পুরু চাদরে ঢেকে থাকে অধিকাংশ এলাকা। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। বিগত বাম জমানাতেও এই দাবি বারবার উঠলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং আইনি জট আর লাল ফিতের ফাঁসে আটকে থেকেছে প্রকল্পটি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বাজেট ১৫০০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়েছিল। সেই অর্থের ৬০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করবে কেন্দ্র এবং বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ রাজ্যকে যোগাতে হবে এমনটাই ঠিক ছিল। কিন্তু গত কয়েক দশকে রাজনৈতিক জাঁতাকলে সেই পরিকল্পনা বিশবাঁও জলে চলে যায়।

ঘাটালের সাংসদ দেব এই মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করার মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও রয়েছে। এমনটাও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল। তাঁদের ধারনা, মেদিনীপুরকে নিজের গড় হিসেবে তুলে ধরেছেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার লোকসভা ভোটেও ঘাটাল ও মেদিনীপুর ছাড়া বাকি কেন্দ্রগুলিতে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। সুতরাং জনকল্যাণ প্রকল্পের পাশাপাশি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান দিয়ে অধিকারী গড়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে চান তিনি? প্রশ্ন উঠছ…।