ডায়মন্ড হারবারে আজ থেকে শুরু হলো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) উদ্যোগে একটি নতুন স্বাস্থ্য প্রকল্প, ‘সেবাশ্রয়’। বৃহস্পতিবার সকালে ডায়মন্ড হারবারের (Abhishek Banerjee) এসডিও মাঠে উপস্থিত হয়ে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। এতে সংশ্লিষ্ট লোকসভা কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভায় নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে। প্রথমে ডায়মন্ড হারবার (Abhishek Banerjee) বিধানসভা এলাকা থেকে শুরু হওয়া এই স্বাস্থ্যশিবিরে এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হবে।
প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসডিও মাঠে পৌঁছানোর পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাকে উত্তরীয় পরিয়ে এবং দেবী সরস্বতীর মূর্তি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এর পরেই তিনি সরাসরি স্বাস্থ্যশিবিরের ভিতরে প্রবেশ করে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা এবং শিবিরের আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেন তিনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্প্রতি দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘নিজের লোকসভা কেন্দ্রে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি বাইরে নিষ্ক্রিয় থাকা কখনোই উদ্দেশ্য নয়।’’ অভিষেক আরও জানিয়েছেন যে, দলের কর্মকাণ্ডে সময় দেওয়ার জন্য তিনি নিজেকে অনেকটা নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘‘এত বড় কাজ। আমায় সময় দিতে হবে। রাতারাতি হয় না। এটা বাস্তবায়িত করতে এক দেড় মাস সময় লেগেছে।’’ তাঁর ভাষায়, দলের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি যেখানে যেতে বলবেন, সেখানে যাবেন, এবং ‘‘আমার লক্ষ্য দলে দলে ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো’’।
এছাড়া, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজনৈতিক অভিযানে নানা ধরনের গুজব এবং অপপ্রচারের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা এগুলো নিয়ে গুজব রটাচ্ছেন। সুব্রত বক্সী বৈঠক করছেন আপনারা খবর করছেন।’’ অভিষেক আরও বলেন, ‘‘যে যার ঘনিষ্ঠ হতে পারে। আমার ঘনিষ্ঠ বা তার ঘনিষ্ঠ কী?’’ তিনি সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনারা সংবাদ মাধ্যমের মান নামাবেন না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের যে কেউ আসতেই পারে যখন ইচ্ছা।’’ অর্থাৎ, তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, দলের কেউ যখন ইচ্ছা, দলীয় কর্মসূচি নিয়ে আসতে পারেন, আর এর মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই।
এছাড়া, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক শিল্পী বন্ধু সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, যিনি তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন। শিল্পীটি জানিয়ে ছিলেন যে, তাঁর একটি শো বাতিল করা হয়েছে, কারণ তাঁর বিরুদ্ধে আরজি (অল ইন্ডিয়া রাজ্য যুব পরিষদ) প্রতিবাদ করেছে। অভিষেক তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সেই শিল্পীটির শো পুনরায় আয়োজনের ব্যবস্থা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি সঙ্গে মেলা কমিটির সদস্য-সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করি। এবং যিনি ফোন করেছিলেন, তিনিও শো করছেন।’’
তিনি ১৪ই অগস্টের ‘‘রাত দখলের ডাক’’ বিষয়ে বিশেষ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যারা রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন, তারা সমর্থন করুন বা না করুন, আমি তাদের সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। আমি আজও একই কথা বলছি।’’ অভিষেক আরও জানান, ‘‘এটাই বাংলার সঙ্গে তফাত।’’ তিনি এই বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন যে, যেকোনো আন্দোলন বা প্রতিবাদ জনগণের অধিকার, এবং তার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সীমারেখা অন্তর্ভুক্ত নয়।
কুণাল ঘোষের প্রতিবাদ সম্পর্কিত প্রসঙ্গে, অভিষেক বলেন, ‘‘কে কোথায় প্রতিবাদ করবে সেটা তার এক্তিয়ার। তার স্বাধীনতা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি জোর করে কারও মাথায় চাপাতে চাই না, কে কোথা দিয়ে হাঁটবে বা চলবে।’’ অভিষেক মনে করেন, ‘‘স্বাধীনতা সকলের আছে।’’ তার কথায়, ‘‘উনি বলতে পারেন। পার্টির তরফে কেউ বলেছে? কোনও নোটিস দেখেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা আমি জেনারেল সেক্রেটারি কিছু বলেছি?’’
এভাবে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে দলের প্রতি নিজের অবিচল আনুগত্য, গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতি অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার সিদ্ধান্ত আমি নিজে নেব।’’