মালদা, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫: মালদায় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC MLA) বিধায়কের প্রকাশ্য হুমকির ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে। টিএমসি বিধায়ক আব্দুল রহিম যিনি মালদার বিধায়ক শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে, আব্দুল রহিম শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ককে অ্যাসিড হামলার হুমকি দিয়ে নক্কারজনক ভাষায় আক্রমণ করেছেন। এই ঘটনায় বিজেপি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আব্দুল রহিম বক্সীকে বলতে শোনা গেছে, যদি বিজেপি নেতারা বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ বা ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ করা বন্ধ না করে। তাদের মুখে অ্যাসিড মেরে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, “যারা আমাদের মানুষকে বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা বলে, তাদের আমরা শিক্ষা দেব।”
এই মন্তব্য শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের প্রতি লক্ষ্য করে বলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যিনি সম্প্রতি অভিবাসীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। এই ঘটনায় বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ করেছে যে টিএমসি রাজনৈতিক স্বার্থে সহিংসতা উস্কে দিচ্ছে।
শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এই হুমকির তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “টিএমসি সরকারের এই ধরনের হুমকি গণতন্ত্রের উপর আঘাত। আমরা আমাদের মতামত প্রকাশের অধিকার রাখি, এবং এই ধরনের ভয় দেখানো আমাদের থামাতে পারবে না।” তিনি বলেন, “টিএমসি বিধায়কের এই হুমকি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।
আমরা এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা দাবি করছি।” বিজেপির মুখপাত্র প্রদীপ ভাণ্ডারীও এই মন্তব্যকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন এবং দাবি করেছেন যে এটি টিএমসির ‘ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতি’র অংশ।
শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ি আসনে বিজেপির শঙ্কর ঘোষ জয়ী হয়েছিলেন, যা টিএমসির জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। তবে, পরবর্তীতে ২০২২ সালের পৌর নির্বাচনে টিএমসি শিলিগুড়িতে ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭টিতে জয়লাভ করে, যা দলের প্রভাব পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দেয়।
এই প্রেক্ষাপটে আব্দুল রহিমের হুমকি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও তীব্র করেছে। বিজেপি দাবি করেছে, টিএমসি তাদের রাজনৈতিক প্রভাব ধরে রাখতে ভয় ও হুমকির রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে।প্রতিবাদ ও আইনি পদক্ষেপএই ঘটনার পর শিলিগুড়িতে বিজেপির নেতৃত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, তবে এখনও কোনও গ্রেফতারির খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশের দাবি জানিয়েছেন।