রাস্তায় মারধরের অভিযোগে শোকজ তৃণমূল নেত্রী

পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের খরিদা এলাকায় এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগে বড় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী (TMC Leader) বেবি কোলে। ঘটনার ভিডিও…

রাস্তায় মারধরের অভিযোগে শোকজ তৃণমূল নেত্রী

পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের খরিদা এলাকায় এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগে বড় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী (TMC Leader) বেবি কোলে। ঘটনার ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। অভিযুক্ত নেত্রীকে ইতিমধ্যেই শোকজ় করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব।

কী ঘটেছিল খরিদায়?
স্থানীয় সূত্রের খবর, খরিদা এলাকার বাড়ির দেওয়াল ভাঙাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল স্থানীয় বাসিন্দা দুর্গা সাহুর সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী (TMC Leader) বেবি কোলের। সোমবার সেই প্রসঙ্গেই খড়্গপুর থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন অনিল দাস নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগ, থানায় যাওয়ার ঠিক আগেই রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারধর করেন বেবি কোলে। শুধু মারধরই নয়, অভিযোগ, অনিল দাসের গায়ে রংও ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।

   

দলের কড়া পদক্ষেপ
ঘটনার পরেই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে অভিযুক্ত নেত্রীকে (TMC Leader) শোকজ় করে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। দলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুজয় হাজরা জানান, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বেবি কোলেকে। এই ধরনের অশোভনীয় আচরণ দল কখনওই সমর্থন করে না।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ঘটনার ভিডিও আমরা দেখেছি। স্থানীয় প্রশাসনকে আইনত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’’

প্রশাসনের ভূমিকা
খড়্গপুর থানার তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও ভাইরাল ভিডিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে।

Advertisements

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয় বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্ব। বিজেপি এবং সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ‘‘তৃণমূলের একাংশের মধ্যে দম্ভ ও ক্ষমতার অপব্যবহারই এ ধরনের ঘটনার মূল কারণ। সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালিয়ে রাজনীতির নামে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘রাজ্যে আইনের শাসন নেই। দিনের আলোয় রাস্তায় মানুষকে মারধর করে রাজনীতি করা হচ্ছে।’’

ঘটনার পর খরিদা এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ‘‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ধরনের ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই। দোষী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’

রাজ্যের শাসক দলের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ এবং দলের কড়া পদক্ষেপ রাজ্য রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন দেখার, তদন্তে কী উঠে আসে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দল ও প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়।