অভিষেকের দাওয়াইয়ে শাসক দলের মানবিক রূপ দেখল বড়ঞা

ভারতীয় রাজনীতিতে শাসক দলের উপর বার বার অভিযোগের আঙুল উঠছে নানা কারণে। খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগে শাসক দল বার বার কাঠগড়ায় দাঁড়ালেও কখনো…

TMC Leader Abhishek Banerjee Sends Financial Aid

ভারতীয় রাজনীতিতে শাসক দলের উপর বার বার অভিযোগের আঙুল উঠছে নানা কারণে। খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগে শাসক দল বার বার কাঠগড়ায় দাঁড়ালেও কখনো কখনো এমন কিছু কাজ সামনে আসে, যা দলের মানবিক দিককে উজ্জ্বল করে তোলে। তেমনই এক উদাহরণ দেখা গেল মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা ব্লকের মাজিয়ারা গ্রামের পঙ্কজ ঘোষের ক্ষেত্রে, যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং পরিবারের মধ্যে এক গভীর শোকের সময়ে তৃণমূল নেতার সাহায্য পেয়ে রক্ষা পেয়েছেন।

পঙ্কজ ঘোষের জীবনে গত কয়েক মাস ছিল চরম দুর্ভাগ্যের। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করা পঙ্কজ আর্থিক ভাবে চরম সংকটে ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তিনি একদিকে তার চিকিৎসা ঠিকভাবে করতে পারছিলেন না, অপরদিকে সংসারের খরচ চালাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছিল। তবে দুর্ভাগ্য সেখানে থামেনি, পঙ্কজ ঘোষের স্ত্রী নিয়তি ঘোষের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে ওঠে। একদিকে সংসারের অভাব, অন্যদিকে স্ত্রীর মৃত্যু শোকের মধ্যে তিনি যেন বিপদে পড়েছিলেন।

   

এমন দুর্দিনে, যখন পঙ্কজ ঘোষ এবং তার পরিবারের জন্য পরিস্থিতি অতিক্রম করা একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছিল, তখন তৃণমূলের বড়ঞা নেতা মাহে আলম এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মানবিক সাহায্য পৌঁছায়। তৃণমূল নেতা মাহে আলম পঙ্কজ ঘোষের বাড়িতে এসে পরিবারের পাশে দাঁড়ান এবং অবিলম্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো নগদ অর্থ এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্য তুলে দেন। এই সাহায্য পেয়ে পঙ্কজ ঘোষের পরিবার যেন একটুকু শান্তি পেল। তার চোখে জল ছিল, কিন্তু সেই অশ্রু ছিল এক নতুন আশার সূচনা। ৬৫ বছর বয়সী পঙ্কজ ঘোষের মুখে একটি হাসি ফুটে ওঠে, যা তার জীবনের কঠিন সময়ের মধ্যেও একটি তাজা শ্বাসের মতো ছিল।

এবং এই সাহায্য যে শুধুমাত্র এক ব্যক্তির জন্য নয়, বরং এটি একটি বড় সামাজিক বার্তাও প্রেরণ করে। একদিকে যেখানে শাসক দলের বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ উঠছে, সেখানে এই মানবিক সাহায্য শাসক দলের একটি আলাদা রূপ প্রকাশ করছে। মুর্শিদাবাদ জেলার মতো একটি গ্রামে, যেখানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রচুর সমস্যা, সেখানেও তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার একটি বাস্তব প্রমাণ।

এবং এটাই গৌরবের বিষয় যে, এই ধরনের সাহায্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রচারের জন্য নয়, বরং এটি মানবতার এক স্বীকৃতি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একুশে জুলাই তার ভাষণে বলেছিলেন, “আমি বিত্তবান চাইনা, আমি বিবেকবান চাই।” আর তারই মধ্যে বড়ঞায় তৃণমূল নেতার মানবিকতা সেই বিবেকবান মনোভাবেরই পরিচায়ক।

মধ্যবিত্ত পরিবারের এক সদস্য যখন এতটা কষ্টের মধ্যে পড়ে, তখন সরকার বা রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা তার জীবনের অভ্যন্তরীণ শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। এই সাহায্য যেন একটি শক্তি-সামর্থ্যের প্রতীক হয়ে উঠলো। তৃণমূলের মানবিক রূপের এই উদাহরণ অন্য রাজ্যে থাকা অসংখ্য মানুষের জন্য একটি প্রেরণা হতে পারে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রচারে নয়, বরং মানুষের জন্য কাজ করার মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডও মুখ্য হতে পারে।
পঙ্কজ ঘোষের পরিবারের সামনে এখন কিছুটা হলেও আশার আলো। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো সাহায্য শুধু তার আর্থিক সমস্যা দূর করেনি, বরং তার মানসিক চাপও কমিয়েছে। পঙ্কজ ঘোষের পরিবার এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিক সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞ, যা তাদের কঠিন সময়ের মধ্যে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।

এদিকে, তৃণমূলের এই মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দলের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে উঠবে এবং সাধারণ মানুষের মাঝে আরও একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে যখন রাজনীতিতে একের পর এক সমালোচনা ও অভিযোগ উঠছে, তখন এই ধরনের কাজই শাসক দলকে জনগণের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে। তবে, প্রশ্ন এখনও থেকেই যায়—এটি কি শুধু দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে খুশি করার উদ্দেশ্য, নাকি সত্যিই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টাই আসল?

পঙ্কজ ঘোষের মতো একজন অসহায় মানুষের সাহায্যে তৃণমূলের এই ভূমিকা এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা রাজনীতির বাইরে মানবতার মাপকাঠিতে একজন নেতা কীভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে, তা দেখাচ্ছে।