তৃণমূলের বড় ধাক্কা, ঘাটালে বিজেপিতে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি

শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক তরজা এবং দলবদলের খেলা তীব্র হয়ে উঠছে। তারই জ্বলন্ত প্রমাণ পশ্চিম মেদিনীপুর…

তৃণমূলের বড় ধাক্কা, ঘাটালে বিজেপিতে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি

শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক তরজা এবং দলবদলের খেলা তীব্র হয়ে উঠছে। তারই জ্বলন্ত প্রমাণ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল, যেখানে সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসের এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ একাধিক নেতা-কর্মী (TMC Faces Setback in Ghatal) যোগদান করলেন বিজেপিতে। এই ঘটনায় শাসকদলের অস্বস্তি যে আরও কয়েকগুণ বেড়েছে, তা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

সম্প্রতি ঘাটাল তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে আরও সংঘবদ্ধ করার বার্তা দেন তৃণমূল নেতারা। সেখানে বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় জয়ের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার বার্তাও দেওয়া হয়। কিন্তু সপ্তাহ পার না হতেই ঘটল সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃশ্য। ঘাটাল সংগঠনিক জেলা বিজেপির এক কর্মী সম্মেলনেই দেখা গেল তৃণমূলের একাধিক নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপিতে যোগদান করছেন।

   

এই দিন ঘাটাল ব্লকের মনসুকা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শুভেন্দু হাজরা, খড়ার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তুফান চৌধুরী, ঘাটাল পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মী প্রদীপ মান্না, সোনা মল্লিক, সুদাকর সানকি, এবং খড়ার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম নেতা রঞ্জিত সামন্ত বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট।

যোগদানকারী পঞ্চায়েত সদস্য শুভেন্দু হাজরা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই মানুষের জন্য কিছু না করে নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্ত। গ্রামের রাস্তাঘাট খারাপ, উন্নয়নের কোনো চিহ্ন নেই। তাই মোদিজীর উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। তৃণমূল এখন ভ্রষ্টাচারী দলে পরিণত হয়েছে, মানুষ পরিবর্তন চাইছে।”

Advertisements

এই প্রসঙ্গে বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, “আজ শুধু শুরু। আগামী দিনে আরও অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দেবেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গড়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।”

তবে এই যোগদান নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাটাল ব্লকের সভাপতি দিলিপ মাজী অবশ্য একে বড় কিছু বলতে নারাজ। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “ওরা তো আগেও বিজেপি করত। আমাদের দলের নাম ব্যবহার করে জিতে চাকরির দাবি করেছিল। চাকরি না দিতে পারায় আবার ফিরে গেছে নিজেদের দলে। তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। তৃণমূল মাটির দল, জনতার দল।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে এই ধরনের দলবদল রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বিজেপি এই যোগদানকে “নতুন বাতাস” হিসেবে দেখলেও, তৃণমূল একে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তবে এটা পরিষ্কার, ঘাটাল-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় রাজনৈতিক উত্তাপ এখন তুঙ্গে।