TMC কাউন্সিলরের অনুষ্ঠানে লগ্নজিতা, ক্ষোভে ফুটছে কর্মীরা

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিতর্কিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কয়েকজন দলীয় কর্মী এবং কাউন্সিলর ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে…

Lagnajita Chakraborty

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিতর্কিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কয়েকজন দলীয় কর্মী এবং কাউন্সিলর ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

দেবাংশুর সরব পোস্ট
তৃণমূলের পরিচিত মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্য ফেসবুকে লেখেন, “তিন-চার মাস আগে যেসব গায়ক, গায়িকা, নায়ক এবং নায়িকা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছিলেন, তাঁদের যদি আজ দলীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি করে আপ্যায়ন করা হয়, তাহলে সাধারণ কর্মীরা তা মেনে নেবে না।”

   

Debangshu Bhattacharya Warns Against Political Polarization Amid Bangladesh Tensions"

দেবাংশু আরও বলেন, “সরকার সবার; তাই সরকারের কাজ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে দলটা আমাদের। তাই দলীয় অনুষ্ঠানে এমন কেউ যেন মঞ্চ আলোকিত না করে যাঁদের কর্মীরা ঘৃণার চোখে দেখে।” এই পোস্টে দেবাংশু নিজের পরিচয় “একজন সাধারণ কর্মী” হিসেবে তুলে ধরেন।

সুদীপ রায়ের প্রতিবাদ
নোয়াপাড়ার তৃণমূল কর্মী সুদীপ রায় ফেসবুকে লিখেছেন, “কলকাতা পৌরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ক্রিসমাস কার্নিভালে গাইতে আসছেন লগ্নজিতা চক্রবর্তী। কিন্তু এই গায়িকা আরজিকর আন্দোলনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে প্রকাশ্যে গালাগালি করেছিলেন।”

সুদীপ আরও বলেন, “৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে অনুরোধ করছি লগ্নজিতাকে অবিলম্বে বাদ দিতে। না হলে আপনার নাম সহ প্রতিবাদ জানাবো।”

Sudip Roy

শ্রীপর্ণা রায়ের ক্ষোভ
উত্তর বারাকপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রীপর্ণা রায় ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে লগ্নজিতা চক্রবর্তী আরজিকর আন্দোলনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছিলেন। ভিডিওটি শেয়ার করে শ্রীপর্ণা লেখেন, “আমাদের নেতারা যাঁদের একসময় নেত্রী এবং কর্মীদের অপমান করতে দেখেছেন, তাঁদের আজ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসাচ্ছেন। অথচ আমরা তিন মাস ধরে মাঠে লড়াই করেছি। তাহলে আমরা কি ভুল ছিলাম?”

Sreeparna Roy

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিতর্কিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ
এমন পরিস্থিতিতে পানিহাটি উৎসবে শিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পানিহাটির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন।

তবে এই ধরনের বিতর্ক তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। দলের অনেকেই মনে করছেন, এভাবে দলীয় কর্মীদের আবেগে আঘাত করলে তা ভবিষ্যতে দলের সাংগঠনিক ভিত্তিকে দুর্বল করতে পারে।

নেত্রীর ভাবমূর্তি নিয়ে সতর্কতা
এই ঘটনার সূত্র ধরে তৃণমূলের নেতাদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে কর্মীরা। তাঁদের মতে, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবমূর্তি রক্ষা করা দলের প্রধান দায়িত্ব। কর্মীদের আত্মত্যাগের প্রতি যদি দলীয় নেতারা সংবেদনশীল না হন, তবে এর প্রভাব ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অঙ্গনে পড়তে পারে।

তৃণমূলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো বিষয়গুলোতে এমন বিতর্ক এড়াতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকেই। এখন দেখার বিষয়, এই বিষয়ে নেতৃত্ব কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।