কয়েকঘন্টার মধ্যেই ওড়িশার এই তিন জেলায় তান্ডব শুরু করবে ‘দানা’

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ (Cyclone Dana)শুক্রবার ভোরে ওড়িশার ভিটরকানিকা জাতীয় উদ্যান ও ধামরা বন্দরের মধ্যে উপকূলে আছড়ে পড়ার আশা করা হচ্ছে। এর বাতাসের গতি ১২০ কিমি প্রতি…

Cyclone Dana

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ (Cyclone Dana)শুক্রবার ভোরে ওড়িশার ভিটরকানিকা জাতীয় উদ্যান ও ধামরা বন্দরের মধ্যে উপকূলে আছড়ে পড়ার আশা করা হচ্ছে। এর বাতাসের গতি ১২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের (Cyclone Dana) মতে, ওড়িশা এবং দক্ষিণ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক উপকূলীয় জেলা ভারী থেকে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির প্রভাবের সম্মুখীন হবে।

 

   

ওড়িশার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা:

কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক এবং বলসোরকে উচ্চ-ঝুঁকির অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২৷ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা (Cyclone Dana)।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা:

দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলা উচ্চ ঝুঁকিতে।
কলকাতা বিমানবন্দর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১৫ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে।
ঝাড়খণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাCyclone Dana)৷

পূর্ব ও দক্ষিণ জেলার ওপর ভারী বৃষ্টির প্রভাব।
রাজ্য সরকার ব্যবস্থা: ওড়িশা সরকার ১০ লক্ষ মানুষের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মহন চরণ মজির মতে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত 30% মানুষকে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া, উপকূলে সমস্ত সামুদ্রিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। জনসাধারণকে নিরাপদ থাকার জন্য সরকারী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আইএমডি এর পূর্বাভাস (Cyclone Dana)অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ রাতের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে, এবং এ সময় তীব্র বৃষ্টি ও ঝড়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সতর্কতা জারি করেছে, এবং উদ্ধারকারী দলগুলো প্রস্তুত রয়েছে। ভুবনেশ্বর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস(Cyclone Dana) দিয়েছে।

এই আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বিভিন্ন জেলার জন্য। অফিসের অধিকর্তা মনোরমা মোহান্তি জানিয়েছেন, ময়ূরভঞ্জ জেলায় ঝড়ের গতিবেগ ৮০-৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। এটি একটি যথেষ্ট উদ্বেগজনক তথ্য, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।

জগৎসিংহপুর, কটক, এবং জাজপুর জেলাগুলিতে ঝড়ের গতিবেগ ৬০-৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা হতে পারে। অন্যদিকে, পুরী, খুরদা, ঢেঙ্কানল, এবং কেওনঝড়ে ঝড়ের গতি ৬০-৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ধরা হচ্ছে। সুন্দরগড়ে এই গতিবেগ ৫০-৬০ কিমি, এবং গঞ্জাম, নয়াগড়, আঙ্গুল, দেওগড়, এবং সম্বলপুরে ৪০-৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টা হতে পারে।

এছাড়া, এই অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। মৌসম ভবন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝোড়ো হাওয়া এবং ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ময়ূরভঞ্জ, বালেশ্বর, ভদ্রক, জাজপুর, কেন্দ্রাপাড়া, কটক, জগৎসিংহপুর, খুরদা, পুরী এবং গঞ্জাম জেলাগুলিতে।

বিশেষ করে পুরী, খুরদা, নয়াগড়, কেওনঝড়, এবং ঢেঙ্কানল জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝড়, ভদ্রক, এবং বালেশ্বরে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন এবং আবহাওয়া অফিস বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য জনগণকে অনুরোধ করেছে। গাছপালা উপড়ে যাওয়া, লাইনচ্যুত হওয়া এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা, রাস্তার কাদামাটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে, তাই সকলকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও সতর্কতার সাথে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি পরিষেবাগুলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রাজ্যের মানুষের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জের সময়, তাই সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা অপরিহার্য। আবহাওয়া অফিসের নিয়মিত আপডেট অনুসরণ করা এবং সচেতন থাকা জরুরি, যাতে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।