Kolkata 24×7 বিশেষ প্রতিবেদন: রেশন দুর্নীতির তদন্ত সূত্র ধরে তৃ়নমূল কংগ্রেস নেতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলাপরিষদ সদস্য শেখ শাহজাহানের ঘাঁটি সন্দেশখালির (Sandeshkhali) সরবেড়িয়ায় ‘বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র মজুত’ রয়েছে বলে দাবি করে সিবিআই। তাদের সঙ্গেই এনএসজি অভিযান চলে। সিবিআই দাবি করে রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ তৃ়নমূল নেতার বাড়িতেই ‘বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র’ মজুত ছিল। এরপরই প্রশ্ন উঠেছে ‘মজুত আগ্নেয়াস্ত্র’ কি নির্বাচনে ভোট লু়ঠের জন্য রাখা ছিল? একইসঙ্গে উঠছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ সংযোগের বিষয়টি।
তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি বানিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠী জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (JMB) ও তাদের ভারতীয় শাখা JMI ঘাঁটি তৈরি করেছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর শহর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে। ২০১৪ সালে খাগড়াগড়ে একটি বিস্ফোরণ তদন্তে জেএমবির সংযোগ উঠে এসেছিল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উৎখাতের পরিকল্পনা বানচাল হয়। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের দশ বছরের ব্যবধানে এবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির অস্ত্র ভাণ্ডার উদ্ধারের ঘটনায় প্রতিবেশি দেশটির তিনটি সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠী ARSA, JMB তথা JMI সংযোগ দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ARSA সংগঠনটি সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী। তারা মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা নিয়ে শেখ হাসিনার সরকারও চিন্তিত। আর JMB গোষ্ঠী আপাতত বাংলাদেশে নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশের জঙ্গি দমন বিভাগের বিশ্লেষণ, ভারতে নতুন ঘাঁটি তৈরি করে জেএমবি নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের ভারতীয় শাখা JMI বিশেষ সক্রিয়। একইভাবে সক্রিয় ইসলামিক স্টেট (ISIS) জঙ্গিরা।
বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। এই জেলার সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকার তৃ়নমূল সমর্থকদের কাছে ‘বাঘ’ তকমা পেয়েছিল শেখ শাহজাহান রেশন দুর্নীতির তদন্তে ধৃত শাহজাহানের অতীত লুকিয়ে আছে বাংলাদেশে এমনই দাবি করেন তার পুরনো সহকর্মীরা।
বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে এসেছিল শাহজাহান। এলাকাবাসীর একাংশ বলছেন, যে দল যখন সরকারে থাকে সেই দলের হয়ে যায় শেখ শাহজাহান। আপাতত তৃণমূলের নেতা। তবে ওর সাথে গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির বিশেষ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। শাহজাহান ও বিজেপির গোপন সম্পর্কের কারণ টাকা! শেখ শাহজাহান সন্দেশখালি ১-ব্লকের তৃণমূল সভাপতি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ। খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হয় শাহজাহান।
অভিযোগ, সীমান্তের পাচার কাজে জড়িত শাহজাহান। আরও অভিযোগ, তার সাথে বিএসএফ ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবির কিছু সংযোগ আছে। এজেন্ট মারফত এই সংযোগ করে শাহজাহান। অভিযোগ, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত চোরাচালানে শাহজাহানের ‘নিজস্ব দল’ খাটে। এই নিজস্ব দল হলো এমন কিছু ছেলে ও মেয়ে যারা সীমান্ত চোরাচালানের বিশেষ অভিজ্ঞ। শাহজাহানের বিরুদ্ধে কাঠ ও গরু পাচারের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মানুষ পাচারের অভিযোগ রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে।