কলকাতা: নদিয়ার কালীগঞ্জে ফের রাজনৈতিক উত্তেজনা। ৯ বছরের তামান্না খাতুন (Tamanna Khatun) খুনের মামলা ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এবার খুনের মামলায় অভিযুক্তের আত্মীয়কে মারধরের অভিযোগ উঠল সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে মোলান্দিতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। জানা গিয়েছে, গুরুতর আহত রফিকুল শেখকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, সিপিএম কর্মী সাদ্দাম শেখ ও ঈদ মহম্মদ-সহ পাঁচজন আচমকা রফিকুলের উপর চড়াও হয়। মুর্শিদাবাদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। হামলার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক। ইতিমধ্যেই মীরা ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে রফিকুলের পরিবার। প্রসঙ্গত, কালীগঞ্জ বিধানসভার উপ নির্বাচনে জিতে তৃণমূলের উন্মত্ত কর্মী-সমর্থকেরা বিজয় মিছিল থেকে ৯ বছরের শিশু তামান্না খাতুনকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় খুদে তামান্নার।
এই নিয়ে তামান্নার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন বামপন্থীরা। তামান্নার পরিবারও বাম-সমর্থক। ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালীগঞ্জ। ওইদিন রাতেই খুন মামলায় ধৃত আদর আলীর আত্মীয় বাদশা শেখকে লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ ওঠে সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল এবং গুরুতর আহত অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।
পরদিন কালীগঞ্জ থানায় মোট ২০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের তালিকায় সাদ্দাম শেখ ও ঈদ মহম্মদের নামও ছিল। জুলাই মাসে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। তবে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর আবার এলাকায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন তাঁরা বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাঁদের ‘দাপট’ থেকেই শনিবার ফের হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি।
অন্যদিকে, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের কর্মীদের ইচ্ছে করে ফাঁসানো হচ্ছে। সিপিএম নেতা দেবাশিস আচার্য বলেন, “তামান্না খুন মামলায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জন প্রকৃত অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টে বাম কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা চাপিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা চলছে।”
ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলছে। তবে ঘটনার পর থেকে কাউকেই এখনও আটক করা যায়নি। এর ফলে মোলান্দি ও আশপাশের গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
