‘বাংলায় প্রগতিশীল মুসলিমদের জায়গা নেই’: তসলিমা

দুই বাংলার সাহিত্যে জনপ্রিয় নাম তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। তবে সাহিত্যের থেকেও ধর্ম সম্পর্কে তার বিতর্কিত মন্তব্য বার বার তাকে লাইমলাইটে নিয়ে এসেছে। তসলিমা যেমন…

Taslima

দুই বাংলার সাহিত্যে জনপ্রিয় নাম তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। তবে সাহিত্যের থেকেও ধর্ম সম্পর্কে তার বিতর্কিত মন্তব্য বার বার তাকে লাইমলাইটে নিয়ে এসেছে। তসলিমা যেমন প্রগতিশীল তেমন ই বরাবর স্পষ্ট বক্তা। মুসলিম ধর্মের কিছু অন্ধকার সামনে আনার দরুন তাকে নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। বাংলাদেশ ছাড়া হতে হয় তাকে। পশ্চিমবঙ্গে এলেও বামপন্থী বা দক্ষিণপন্থী কোনো জমানাতেই তাকে বাংলায় ঠাঁই দেওয়া হয়নি।

তবে প্রত্যেকবারের মত এবারেও বিস্ফোরক তসলিমা। ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে ভেস্তে যাওয়া জাভেদ আখতারের অনুষ্ঠান। যা হওয়ার কথা ছিল বাংলায় এবং কেটে উদ্যোক্তা ছিল পশ্চিমবঙ্গ উর্দু অ্যাকাডেমি। কিন্তু বেশ কয়েকদিন আগে মুসলিম ধর্ম সম্পর্কে কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করায় এই অনুষ্ঠান ভেস্তে দিয়েছে উর্দু অ্যাকাডেমি।

   

এই ঘটনাকেই কেন্দ্র করেই আবারও সরব হয়েছেন তসলিমা। তিনি বলেছেন পশ্চিমবঙ্গে রুচিশীল, মুক্তমনা এবং প্রগতিশীল মুসলিমদের কোনো জায়গা নেই। এই অভিযোগ করতে গিয়ে তিনি তিনটি উদাহরণ দিয়েছেন।

যেমন তিনি বলেছেন ১৯৩২ সালে কলকাতার মুসলিম মৌলবাদিরা বেগম রোকেয়ার মৃত্যুর পর তাঁকে কলকাতার কোনও কবরখানায় স্থান দেয়নি। তাঁকে লোকচক্ষুর আড়ালে গঙ্গার ধারে সোদপুরের পানিহাটি গ্রামে কবর দিতে হয়েছিল। বেগম রোকেয়া ছিলেন নারীবাদী লেখক, এবং নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনের পক্ষে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।

২০০৭ সালে বাংলার টানে প্রাণের টানে কলকাতায় বাস করা প্রগতিশীল মুক্তচিন্তক নির্বাসিত নারীবাদী লেখক তসলিমা নাসরিনকে রাজ্যছাড়া করে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার, এবং সরকার পরিবর্তন হলেও তসলিমাকে পশ্চিমবঙ্গে আর প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। ২০১৩ সালে প্রগতিশীল নাস্তিক লেখক সালমান রুশদিকে কলকাতার সাহিত্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাধা দেয়।

Advertisements

ঠিক একই রকম ভাবে এবার প্রগতিশীল জাভেদ আখতারের অনুষ্ঠানকে ভেস্তে দিতে সম্মত হয়েছে রাজ্য সরকার। স্বভাবতই জাভেদ আখতারের এই ঘটনায় শুধু তসলিমা নন সরব হয়েছেন বাংলার মানুষ। তারা বলছেন একদিন শিবসেনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জনপ্রিয় গজল গায়ক গুলাম আলীকে কলকাতায় অনুষ্ঠান করিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু আজ ভোট যে বড় বালাই তাই মুসলিম ভোটব্যাংকের দিকে তাকিয়ে এই অনুষ্ঠান ভেস্তে দিয়েছে রাজ্যসরকার।

লাল চোখ! তৃণমূলের পঞ্চায়েতে সিপিএমের ঘেরাও

অনেকেই বলেছেন বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী সহ অনেকেই সর্ব ধর্ম সম্মেলনের কথা বলেন নামাজ পড়েন কিংবা ইফতারে যান। কিন্তু প্রগতিশীল হতে গেলে ধর্মের উপরে উঠতে হয়। সেখানে নির্দিষ্ট কোনো ধর্ম থাকেনা সেখানে থাকে মুক্তমন এবং চিন্তা। যা দীর্ঘদিনের কিছু মূঢ় চিন্তাভাবনাকে ছুড়ে ফেলে দিতে সাহায্য করে। যার অভাব প্রতি পদে পদে টের পাওয়া যাই এই বাংলায়।