বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে মঙ্গলবার উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu) ফের সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং মার্শালদের ডেকে তাঁকে সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ককে বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষা আন্দোলন মঞ্চ খুলে দেওয়া নিয়ে তীব্র তর্ক-বিতর্ক। তার উপরে কলকাতা পুলিশের সেনাবাহিনীর ট্রাক আটকানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা।
এছাড়াও, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে দেশবিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ এবং রাজ্যে সেনা ও পুলিশের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বিরোধীদের তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়।অধিবেশনের শুরুতেই তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষা আন্দোলন মঞ্চ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
গতকাল ই সেনাবাহিনী প্রেস বিবৃতিতে স্পষ্ট করেছিল যে দুদিনের অনুমতি নিয়ে তার বেশি সময় ধরে প্রতিবাদ মঞ্চ বেঁধে রাখার কোনো নিয়ম নেই। তার জন্য আবার কোর্টের অনুমতি নিতে হবে। পাল্টা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের যুক্তি ছিল সেনাবাহিনী পুলিশকে কোনোরকম তথ্য না দিয়েই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মঞ্চ ভাঙতে আসে। কিন্তু প্রেস বিবৃতিতে সেনাবাহিনী স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যে কথা বলছেন। পুলিশকে জানিয়েই সমস্ত আইন মেনে এই মঞ্চ গতকাল ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই মঞ্চ বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচারের জন্য গঠিত হয়েছে। কিন্তু বিরোধী দল বিজেপি এই মঞ্চকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ তুলেছে। শুভেন্দু অধিকারী অধিবেশনে উঠে দাবি করেন, “তৃণমূলের এই ভাষা আন্দোলন মঞ্চ আসলে বাংলার জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার একটি চক্রান্ত। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য হুমকি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, তৃণমূল সরকার ইচ্ছে করে রাজ্যে সেনা ও পুলিশের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছে, যা রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর।এই মন্তব্যের জেরে তৃণমূলের বিধায়করা তীব্র প্রতিবাদ জানান। এই বিতর্কের মধ্যেই বিধানসভায় উত্তেজনা চরমে ওঠে।অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু বিরোধী বিধায়কদের স্লোগান ও তৃণমূলের পাল্টা স্লোগানে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।
শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং তাঁর পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন। এর জেরে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মার্শালদের ডাকা হয় এবং শুভেন্দু সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ককে জোর করে বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়।
CAB জীবনকৃতি সম্মান পেয়ে আবেগঘন শ্যামা সাউ, দিলেন বিশ্বকাপ নিয়ে বড় বার্তা
এই ঘটনায় বিধানসভার বাইরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।বিরোধী দলনেতা বলেন, “এটা গণতন্ত্রের হত্যা। তৃণমূল সরকার বিরোধী কণ্ঠস্বর দমন করতে মার্শাল ব্যবহার করছে। আমরা এই স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামব।” অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের মতে , “বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।