বালি মাফিয়ার সাথে খাবার পরিবেশন, মমতাকে কটাক্ষ শুভেন্দুর

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি এ বছরও তীব্র আকার ধারণ করেছে (Suvendu)। প্রতি বছরের মতো এবারও জেলার বিভিন্ন এলাকা জলের তলায় ডুবে গেছে, যার জন্য…

Suvendu and mamata clash

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি এ বছরও তীব্র আকার ধারণ করেছে (Suvendu)। প্রতি বছরের মতো এবারও জেলার বিভিন্ন এলাকা জলের তলায় ডুবে গেছে, যার জন্য রাজ্য সরকারের অপদার্থতাকে দায়ী করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য হুগলি জেলায় গিয়ে ত্রাণশিবিরে ‘বালি মাফিয়া’ হুদা খানের পয়সায় তৈরি খিচুড়ি বিতরণ করেছেন।

শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি ত্রাণশিবিরে গিয়ে বন্যার্তদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করেন, এবং এই সময় তাঁর পাশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা হুদা খান।

   

শুভেন্দু অধিকারী তাঁর সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অপদার্থতার কারণে প্রতি বছরের মতো এ বছরও হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকা জলের তলায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রাণশিবিরে গিয়ে বালি মাফিয়া হুদা খানের পয়সায় বানানো খিচুড়ি, হুদা খানকে পাশে রেখে পরিবেশন করলেন।

এই হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা!”হুগলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বছরের পর বছর ধরে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং নদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধির কারণে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলি প্রায়শই প্লাবিত হয়। এই বছরও ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খোলার ফলে গঙ্গা নদী এবং এর শাখা-প্রশাখাগুলির জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বন্যা প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং নদী তীরবর্তী এলাকায় বাঁধ নির্মাণে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা এই সমস্যাকে বছরের পর বছর তীব্র করে তুলছে।শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগে হুদা খানের বিরুদ্ধে ‘বালি মাফিয়া’ হিসেবে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তিনি দাবি করেছেন, হুদা খানের মতো ব্যক্তিরা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে পরিবেশের ক্ষতি করছেন, যা বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

এই অবৈধ বালি উত্তোলন নদী তীরের ক্ষয় বাড়িয়ে বন্যার প্রকোপ বাড়াচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে বলেছেন, “তৃণমূল সরকার এই মাফিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ বন্যার দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রাণশিবিরে বন্যার্তদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় সাহায্যের আশ্বাস দেন।

Advertisements

তিনি জানান, রাজ্য সরকার বন্যার্তদের জন্য খাদ্য, পানীয় জল এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছে। তবে, শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগে তৃণমূল নেতা হুদা খানের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বালি মাফিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ত্রাণ বিতরণ করছেন, যা রাজ্যের শাসনব্যবস্থার দুর্বলতার প্রমাণ।”

এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। সামাজিক মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং অনেকে তাঁর অভিযোগের সমর্থনে মত প্রকাশ করেছেন। এক্স প্ল্যাটফর্মে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “বালি মাফিয়ার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই ছবি তৃণমূলের দুর্নীতির প্রকাশ্য প্রমাণ।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি: বাংলা ভাষা ছাড়া ভারতীয় সংস্কৃতি গঠন সম্ভব নয়

তবে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, হুদা খান একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং তিনি স্থানীয় স্তরে ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করছেন।হুগলির বন্যা পরিস্থিতি এবং এই রাজনৈতিক বিতর্ক রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অবৈধ বালি উত্তোলন এবং নদী তীর সংরক্ষণে ব্যর্থতা বন্যার প্রকোপ বাড়াচ্ছে। এই ঘটনা আগামী দিনে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।