বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu) আবারও সরব হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণ নীতির কারণে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এক ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সরকারি কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।
এমনকি, জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলাফলও এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটের রাজনীতি এবং তোষণ নীতিকে দায়ী করেছেন। এই ঘটনা রাজ্যের প্রায় পাঁচ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ বিপন্ন করছে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় ওবিসি তালিকার বাইরে থাকা ৭৬টি মুসলিম সম্প্রদায়কে অবৈধভাবে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছেন, যাতে তারা ওবিসি-দের সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন।
এই কারণে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন। এছাড়া, তিনি বলেন, সরকারি কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এর ফলে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার পুরোপুরি বেসরকারিকরণের পথে এগোচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিন মাস পার হয়ে গেলেও সরকারি কলেজে ভর্তি শুরু হয়নি। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফলও এখনও ঘোষণা করা হয়নি। অন্য রাজ্যে ফলাফল ঘোষণার পর ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এমন অবস্থা স্বাধীনতার পর এই প্রথম।
এর ফলে পাঁচ লক্ষের বেশি ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ বিপদে পড়েছে।” তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোটি কোটি টাকার ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছেন।”এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি পরিষদীয় দলের ১৫ জন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
তিনি রাজ্যপালের কাছে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে একটি ডেপুটেশন তুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। শুভেন্দু বলেন, “রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে। আগামী প্রজন্মের পাঁচ লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে আমরা সরব হয়েছি এবং রাজ্যপালের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছি।”এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এক্স প্ল্যাটফর্মে শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগ নিয়ে বিজেপি সমর্থকরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছেন।
ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা করা হচ্ছে।” তবে, তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগের জবাবে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও এই পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। তারা দ্রুত ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
কেন্দ্রের বঞ্চনায় থমকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান, উদ্যোগ নিল রাজ্য
রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার এই সংকট নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ এবং সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে সবার নজর রয়েছে।