‘মসজিদের সামনে জটলা, রোহিঙ্গা লেলিয়ে আক্রমণ’: শুভেন্দু

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে মঙ্গলবার (Suvendu) কোচবিহারের খাগড়াবাড়ি এলাকায় হামলার ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী তার এক্স হ্যান্ডেলে অভিযোগ করেছেন,…

Suvendu allegation

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে মঙ্গলবার (Suvendu) কোচবিহারের খাগড়াবাড়ি এলাকায় হামলার ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী তার এক্স হ্যান্ডেলে অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে ঠিক খাগড়াবাড়ি মসজিদের সামনে পরিকল্পিতভাবে তাঁর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে।

এই ঘটনায় তাঁর বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে এবং পুলিশের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার জন্য তিনি রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে সরাসরি দায়ী করেছেন।

   

শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের নির্দেশে তিনি কোচবিহারের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। তাঁর কর্মসূচি আগে থেকেই পুলিশের কাছে জানানো ছিল। তবে, খাগড়াবাড়ি চৌপথির কাছে তাঁর কনভয় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।

এই বিক্ষোভের মধ্যে লাঠি, ইট ও পাথর দিয়ে তাঁর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। শুভেন্দুর দাবি, এই হামলায় রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিমদের জড়ো করা হয়েছিল, যারা তৃণমূলের ভোট ব্যাংক এবং মিটিং-মিছিলের ভিড় সৃষ্টির কারিগর। তিনি বলেন, “এই হামলা পরিকল্পিত। খাগড়াবাড়ি মসজিদের সামনে এই জমায়েতের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে ছিলাম বলে প্রাণে বেঁচে গেছি।”

এই ঘটনায় বিজেপি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পুলিশের নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “পুলিশের সহায়তায় তৃণমূল শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

পুলিশের সামনে গাড়িতে হামলা করা হয়েছে।” বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারও প্রশ্ন তুলেছেন, “শুভেন্দুর কর্মসূচি আগে থেকে ঘোষিত ছিল। তাহলে পুলিশ কীভাবে বিক্ষোভকারীদের এত কাছে পৌঁছাতে দিল?”

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কোনও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূলের কোনও নেতা-কর্মী এতে জড়িত নন।” রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ জানিয়েছেন, “যারা বাংলা ভাষাকে অপমান করে, তাদের বিরুদ্ধে কালো পতাকা দেখানো হবে। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, কোচবিহারের ১৯টি স্থানে তৃণমূলের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ছিল।

Advertisements

শুভেন্দু অধিকারী এই হামলার পেছনে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের শক্তি এই রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উপর নির্ভরশীল। এরা তাদের ভোট ব্যাংক।

দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এই অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের দাবি করায় আমাদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, ধর্মীয় স্থান যেমন মসজিদকে এই হামলার জন্য অপব্যবহার করা হয়েছে।

পুলিশ এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে, শুভেন্দু অধিকারী পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “পুলিশ সুপারের মদতে এই হামলা হয়েছে। আমি কলকাতা হাইকোর্টে এই ঘটনার বিচার চাইব।” এই ঘটনার পর শুভেন্দু বিজেপির জেলা কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং পরে হেঁটে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান।

এই ঘটনা রাজ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক হিংসা চলছে, এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এই ধরনের ঘটনাকে উৎসাহিত করছে।

ভারতের শীর্ষ রফতানিকারক রাজ্য হিসেবে রেকর্ড মোদী রাজ্যের

অন্যদিকে, তৃণমূল দাবি করছে, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের কারণে এই বিক্ষোভ হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে কোচবিহারে উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং আগামী দিনে এটি রাজ্য রাজনীতিতে আরও বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে।