বারাসতে শুভেন্দু, রাজনৈতিক উত্তাপে কাঁপছে উত্তর ২৪ পরগনা

আজ, ৬ই আগস্ট (মঙ্গলবার), বারাসাতে আসছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর এই সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই চড়েছে রাজনৈতিক পারদ। উত্তর ২৪ পরগনার এই…

suvendu slams police

আজ, ৬ই আগস্ট (মঙ্গলবার), বারাসাতে আসছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর এই সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই চড়েছে রাজনৈতিক পারদ। উত্তর ২৪ পরগনার এই গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিজেপির বড়সড় কর্মসূচি রয়েছে আজ, যেখানে মুখ্য বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন শুভেন্দু অধিকারী নিজে।

সূত্রের খবর, বারাসাত শহরের স্টেশন রোড সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত হচ্ছে এই জনসভা। সকাল থেকেই এলাকায় ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রায় ৫০০-রও বেশি পুলিশ কর্মী মোতায়েন রয়েছে। গোটা সভাস্থল কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে। বিজেপির দাবি, এই সভায় কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক যোগ দেবেন।

   

শুভেন্দুর বার্তা: তৃণমূলের “দুর্নীতি” নিয়ে সরব
বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যুতে তীব্র আক্রমণ শানাবেন। বিশেষ করে, শিক্ষা দুর্নীতি, চাকরি কেলেঙ্কারি এবং পানীয় জলের সংকট নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তুলবেন তিনি। একইসঙ্গে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি’ প্রসঙ্গে করা মন্তব্যের পাল্টা জবাবও দিতে পারেন শুভেন্দু।

রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংঘাত চরমে পৌঁছেছে, তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠতে চলেছে আজকের বারাসাত। শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠমহলের মতে, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক সভা নয়, বরং ২০২৬ বিধানসভার প্রস্তুতির দিশা দেখাবে এই কর্মসূচি।

তবে বিজেপির সভার আগেই রাজনৈতিক পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেত্রী ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বারাসাতের মানুষ গুজব বা বিদ্বেষের রাজনীতি চায় না। শুভেন্দু বাবু আসছেন, আসুন। কিন্তু মানুষ জানে কারা উন্নয়ন করেছে আর কারা ভাঙচুরের রাজনীতি করে।”

Advertisements

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর আগমন নিছকই লোক দেখানো, মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা। তৃণমূলও আজ বারাসাতে একটি “জনসংযোগ যাত্রা” করবে বলে জানা গেছে, যাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে বিজেপির অভিযোগ খণ্ডন করা যায়।

বারাসাত পুরসভার তরফে সভাস্থলের আশপাশে সাফাই ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না।

এদিকে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। কেউ কেউ বলছেন, “শুভেন্দু বাবুর বক্তব্য শুনব, কী বলেন সেটাই এখন দেখার।” আবার কারও মত, “রাজনীতি করে লাভ নেই, মানুষ কাজ চায়।”

সার্বিকভাবে বলতে গেলে, শুভেন্দু অধিকারীর আজকের বারাসাত সফর কেবল একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি উত্তর ২৪ পরগনার রাজনৈতিক হাওয়ার দিশাও ঠিক করবে। ২০২৬-এর ভোট যুদ্ধের আগে এই সভা হতে পারে বিজেপির শক্তি প্রদর্শনের বড় মঞ্চ। এখন দেখার, শুভেন্দুর বক্তব্য ঠিক কতটা প্রভাব ফেলতে পারে বাঙালির মননে ও ভোট রাজনীতিতে।