কলকাতা: একদিকে মহুয়া মৈত্র বলছেন, “বাংলাদেশ ভারতের থেকে ভালো”, অন্যদিকে সাবিত্রী মিত্রর দাবি, “জঙ্গিরা পর্যটকদের মারে না”, তার উপর সংসদে দাঁড়িয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গেল ‘আজাদ কাশ্মীর’। একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে শাসকদল তৃণমূল। এবার তাঁদের একহাত নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বললেন, “এরা যদি ভারতের ভিতরেই পাকিস্তানি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ঘোরেন, তবে এঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়া উচিত (Suvendu Adhikari TMC Criticism)।”
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন, বাংলাদেশের পরিকাঠামো ভারতের থেকে অনেক উন্নত, এবং ভারতে কেউ থাকতে চায় না। এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর জবাব, “মহুয়া যদি মনে করেন বাংলাদেশ ভালো, তাহলে সেখানেই চলে যাওয়া উচিত। ভারতের অপমান করে যাঁরা গর্ব বোধ করেন, তাঁদের এই দেশ আর প্রয়োজন করে না।”
তবে বিতর্ক থেমে থাকেনি সেখানেই। মালদার বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে বলেন, “জঙ্গিরা সাধারণত পর্যটকদের কিছু করে না, বরং সম্মান করে। তাহলে ওই পর্যটকদের মারল কে?”
এই বক্তব্যে বিস্ফোরক শুভেন্দু বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য যারা করেন, তাঁরা না জেনে না বুঝে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। এঁদের বিবেচনা করার সময় এসেছে, রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞায় এঁরা পড়েন কি না।”
পাশাপাশি, সংসদে দাঁড়িয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বলায় তাঁর বিরুদ্ধেও চরম কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর মন্তব্য, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা জল খেয়ে থাকেন আর কতটা স্থল, তা দেশের মানুষ জানে। কিন্তু সংসদের পাটিতে দাঁড়িয়ে এভাবে কথার খেলাপ করা ক্ষমাযোগ্য নয়।”
এদিকে, দিল্লিতে এক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের শিশুকন্যার উপর নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা দাবি করেন, তা ভুয়ো বলে জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এই ইস্যুতে শুভেন্দুর ঘোষণা, “আমি কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীকে বলব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে থানায় গিয়ে এফআইআর করুন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যদি গুজব ছড়ান, তবে আইন তো নিজের পথেই চলবে।”
তৃণমূল নেতৃত্বের একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে জোর তরঙ্গ তুলছে। প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক ভারসাম্য ফেরাতে শীর্ষ নেতৃত্ব এবার আদৌ কড়া বার্তা দেবেন কি?