কলকাতা: ২১ জুলাই শহিদ দিবসকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকেই কলকাতা শহরের হৃদয়ে যেন ঢেউ তুলেছে মানুষের ঢল। ধর্মতলায় হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থকের জমায়েত ঘিরে রীতিমতো অচল অবস্থা শহরে ট্র্যাফিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক উত্তেজনা, সবকিছুই তুঙ্গে।
এই আবহেই পাল্টা কর্মসূচিতে উত্তরবঙ্গে ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে রওনা দেওয়ার আগে শহরের বুকে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের শহিদ দিবস সভাকে নিশানা করতে একটুও পিছু হটলেন না তিনি। কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কটাক্ষের সুরে বলেন, “এটা কোনও সভা নয়, পাগলু ডান্স হবে। (Suvendu Adhikari Slams TMC Rally)”
শুভেন্দুর অভিযোগ, “অনেক মানুষ স্টেশনে এসে ফিরে যাচ্ছেন। তাঁদের জোর করে আনা হচ্ছে। এই ২১ জুলাইয়ের সঙ্গে শহিদদের কোনও সম্পর্ক নেই, এটি নিছকই তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রচার।”
বিজেপির বরাবরের অভিযোগ, তৃণমূল শহিদদের স্মরণ নয়, বরং রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করছে এই দিনটিকে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য সেই সুরেই আগুন ঢালছে। পাশাপাশি, কসবা কাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর দিকেও নজর ফেরাচ্ছে বঙ্গ রাজনীতি।
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও আইনি টানাপড়েনের পর অবশেষে অনুমতি মেলায় রওনা দিয়েছে বিজেপি। শুভেন্দুর দাবি, “২০২০-তে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ঠিকই, তবে এবার বিজেপি সংস্কৃতির মধ্যে কোনও গন্ডগোল থাকবে না। শান্তিপূর্ণভাবেই হবে অভিযান।”
এই মুহূর্তে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির মূল মঞ্চ হিসেবেই ব্যবহার করা হচ্ছে ২১ জুলাইকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণে মিলতে পারে ভোটের রূপরেখা। অন্যদিকে, বিজেপিও স্পষ্টতই ২১ জুলাইয়ের পাল্টা বার্তায় রাজনৈতিক জমি পাকা করতে মরিয়া।
একদিকে তৃণমূলের বার্ষিক সভা, অন্যদিকে বিজেপির ‘উত্তরকন্যা অভিযান’—এই দুই শিবিরের মুখোমুখি অবস্থানে বাংলা রাজনীতির উত্তাপ ছুঁয়ে যাচ্ছে নতুন মাত্রা।