বিধানসভায় ‘হিন্দু নির্যাতন’ ইস্যুতে ফের বিক্ষোভ, শুভেন্দুর বক্তব্যে উত্তাল পরিস্থিতি

মঙ্গলবার বিধানসভায় ফের উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় ‘হিন্দু নির্যাতন’ ইস্যুতে। দোল এবং হোলি উৎসবের সময় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল, তা নিয়ে একপ্রস্থ…

Suvendu Adhikari Slams Biman Banerjee Over Legislative Issues

মঙ্গলবার বিধানসভায় ফের উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় ‘হিন্দু নির্যাতন’ ইস্যুতে। দোল এবং হোলি উৎসবের সময় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল, তা নিয়ে একপ্রস্থ তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। বিজেপি এদিন এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি তোলার পরই পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু(Suvendu Adhikar)  অধিকারীসহ বিজেপির সদস্যরা শোরগোল করতে শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে তারা ওয়াক আউট করেন।

short-samachar

   

রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন যখন শুরু হয়, তখন বিজেপির তরফ থেকে শংকর ঘোষ একটি মুলতুবি প্রস্তাব আনেন। তিনি দাবি করেন, দোলের সময় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের উপর অত্যাচার হয়েছে এবং জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। আলোচনার অনুমতি না দিলে, অন্তত সরকার পক্ষ যেন এ বিষয়ে বিধানসভায় একটি বিবৃতি দেয়, এমন আবেদনও জানান শংকর ঘোষ। এর পরেই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়া জানান, বলেন যে, এর আগেও এই ধরনের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিবৃতি দিয়েছেন। সুতরাং, পুনরায় আলোচনা করার প্রয়োজন নেই।

এই মন্তব্য শোনার পরই বিজেপি সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁরা স্লোগান দিতে শুরু করেন, “সরকার হিন্দু বিরোধী”। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু মন্ত্রী এবং বিধায়করা পালটা স্লোগান দেন। স্লোগান পাল্টা স্লোগানে বিধানসভা চত্বরে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলতে থাকে এই তীব্র বিরোধিতা, যার পর অবশেষে বিজেপির সদস্যরা শংকর ঘোষের নেতৃত্বে ওয়াক আউট করে সভা ত্যাগ করেন।

এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকেও বিজেপির আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। সরকারের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, অরূপ বিশ্বাস এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি করেন, বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে এবং রাজ্যের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য বিধানসভাকে ব্যবহার করছে। তাঁরা এও বলেন, যদি এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়, তবে বিজেপির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, রাজ্যে হিন্দু-মুসলিমের সম্পর্ক বেশ ভাল এবং এর একাধিক নজির রয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

রাজ্য বিধানসভার এই উত্তাল পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, রাজ্যের রাজনীতি এবার ধর্মীয় বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি, তৃণমূল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে এই ধরনের ইস্যু নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করছে।

এভাবে, বিধানসভায় ‘হিন্দু নির্যাতন’ ইস্যুতে তৈরি হওয়া উত্তাপ আগামী দিনে আরও বড় আকারে রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করতে পারে।