হার্মাদের পর জেহাদি…নন্দীগ্রামে অত্যাচার চলছেই, বিস্ফোরক শুভেন্দু

নন্দীগ্রাম। এক সময়ের রাজনৈতিক সংগ্রামের উর্বর ভূমি। আজও সেখানে উত্তেজনার আগুন জ্বলছে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দাবি, হার্মাদদের যুগ…

Suvendu-Adhikari

নন্দীগ্রাম। এক সময়ের রাজনৈতিক সংগ্রামের উর্বর ভূমি। আজও সেখানে উত্তেজনার আগুন জ্বলছে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দাবি, হার্মাদদের যুগ পেরিয়ে জেহাদিদের প্রভাব বেড়েছে। বুধবার নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর। সিপিআইএম ও তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, “নন্দীগ্রামে আগে হার্মাদদের অত্যাচার সহ্য করেছি, এখন জেহাদিদের অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে।”

নন্দীগ্রামের বর্তমান চিত্র
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে উঠে আসে সাম্প্রতিক দুটি হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ। প্রথমত, বিষ্ণুপদ মণ্ডল হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনাকে পারিবারিক বিরোধের ফলাফল বলে অভিহিত করে শুভেন্দু বলেন, “উত্তম মণ্ডল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তার পরিবার বিজেপিকে ভোট দিলেও খুনী, খুনীই। আমরা কখনও খুনের সমর্থন করি না। খুনের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”

   

দ্বিতীয়ত, বৃন্দাবনচকের ঘটনায় শুভেন্দুর দাবি, “এটি একটি অরাজনৈতিক ঘটনা। এর পেছনে যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী দায়ী, তাদের নিরপেক্ষ তদন্ত করে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু বাম আমলের মতো ভোটার তালিকা ধরে মানুষকে আসামি করার প্রবণতা ফিরে আসা উচিত নয়।”

হনুমান পুজো এবং ধর্মীয় হিংসা
ধর্মীয় বিভাজন এবং হিংসার প্রসঙ্গও শুভেন্দুর বক্তব্যে গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি বলেন, “হনুমান পুজো করতে গেলে আক্রমণ করা হচ্ছে। নন্দীগ্রামের কিছু অঞ্চলে ভোটের সময় বোমা ফেলা হচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের এলাকায় স্কুল-কলেজ নেই, অথচ সেখানেই এই ধরনের কালচার গড়ে উঠেছে। এই কালচার ভালো নয়।”

শুভেন্দু আরও বলেন, “এই ধরনের ঘটনা নন্দীগ্রামের পরিবেশকে কলুষিত করছে। আমরা একসময় হার্মাদদের বিরুদ্ধে লড়েছি, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সেই সংস্কৃতি বদলাবে ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন নতুন রূপে জেহাদিদের অত্যাচার শুরু হয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”

তৃণমূল ও সিপিআইএমকে একযোগে আক্রমণ
নন্দীগ্রামের সংগ্রামী ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে শুভেন্দু বলেন, “একসময় সিপিআইএম হার্মাদ বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল। তৃণমূল সেই অত্যাচারের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তারাই আরেক ধরনের অত্যাচার চালাচ্ছে।”

তৃণমূলকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূল সরকার নন্দীগ্রামে শান্তি ফেরানোর বদলে নতুন বিভাজন তৈরি করেছে। জেহাদিদের মদত দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে নন্দীগ্রামের সাধারণ মানুষকে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।”

বিরোধী দলনেতার দাবি
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, নন্দীগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি রাজ্যের শাসক দলের সমর্থনে জেহাদিদের বাড়বাড়ন্তের কারণেই তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। যারা ধর্ম বা সম্প্রদায়ের নামে বিভেদ তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”

নন্দীগ্রামের মাটি দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রামের সাক্ষী। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে উঠে এসেছে সেই সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। হার্মাদদের অত্যাচারের যুগ পেরিয়ে জেহাদিদের আধিপত্য, ধর্মীয় হিংসা এবং রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ নন্দীগ্রামের বর্তমান অবস্থার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এই বিভাজনমূলক রাজনীতি বন্ধ না হলে নন্দীগ্রামের শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা অসম্ভব। তার বক্তব্যে সিপিআইএম ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।