স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ পরীক্ষায় অসঙ্গতি এবং দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে অনেকটাই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে কলকাতার বহু শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা মামলার মধ্যে জড়িয়ে পড়েন। চলতি বছরের শুরুর দিকে, সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করা হয়েছিল, যাতে পূর্ববর্তী রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হয়। তবে, সোমবার (১ ডিসেম্বর) শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
২০১৬ সালে SSC নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং অসঙ্গতির অভিযোগ ওঠে। পরীক্ষায় অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ, প্রশ্নফাঁস এবং দুর্নীতির নানা অভিযোগ সামনে আসে, যা শিক্ষার্থী এবং জনগণের মধ্যে গভীর হতাশা সৃষ্টি করে। এই ঘটনায় বহু চাকরিপ্রার্থী দীর্ঘদিন ধরে আদালতের দারস্থ হন। এরপর কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয়, এবং ২০২১ সালে হাইকোর্ট কিছু নিয়োগের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়। তবে মামলাকারীরা হাইকোর্টের রায়ের প্রতি সন্তুষ্ট না হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন। তারা রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন জানান, তবে সেই আবেদন খারিজ হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার রায়ের পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত আবেদন খারিজ করে দেন। তাদের মতে, মামলার সিদ্ধান্তটি সঠিক এবং আর কোনো পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। বিচারপতিরা জানিয়েছেন যে, মামলাকারীরা যদি মনে করেন, তাদের দাবি সঠিক এবং নতুন কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে, তবে তারা কলকাতা হাইকোর্টে পুনরায় আবেদন করতে পারেন। এই রায়ের ফলে মামলাকারীরা কিছুটা হতাশ হলেও, বিচারপতিরা তাদের জানিয়েছেন যে, আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে যেকোনো নতুন আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে করা যেতে পারে। এর মানে, যে কোনো নতুন তথ্য বা যুক্তি থাকলে, সেগুলির ওপর ভিত্তি করে কলকাতা হাইকোর্ট পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে। বিচারপতিরা তাদের পর্যবেক্ষণে আরও বলেছেন, “আমরা শুনানির পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবং মামলার পুনর্বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। যদি মামলাকারীরা মনে করেন, তাদের কাছে কোনো নতুন তথ্য বা প্রমাণ রয়েছে যা আগে আদালতের নজরে আসেনি, তবে তারা তা কলকাতা হাইকোর্টে তুলে ধরতে পারেন।”
এছাড়া, বিচারপতিরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, আদালত সমস্ত পক্ষের অবস্থান শুনে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এখন আর কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। তবে, মামলাকারীদের কাছে এটি একটি সতর্কবার্তা, যে তারা যদি নতুন প্রমাণ নিয়ে আসতে চান, তবে সেটা হাইকোর্টে গিয়ে করার জন্য স্বাধীন।
