রাজ্য বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীসহ (Suvendu Adhikari) ৪ বিজেপি সাংসদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি রাজ্যপালকে সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এই চিঠি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও তাৎপর্য সৃষ্টি করেছে।
সুকান্ত মজুমদার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘অধিবেশনের শালীনতা বজায় রাখা প্রয়োজন। তবে, উদ্বেগের বিষয় যে যারা বাংলার মানুষের কথা তুলে ধরেন, তাদেরই বারবার সাসপেন্ড করা হয়। আমি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে আপনাকে অনুরোধ করছি, সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন এবং বিরোধী দলনেতাসহ অন্যান্য সাসপেন্ড হওয়া বিধায়কদের ওপর থেকে সাসপেনশন দ্রুত প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করুন।’
এই ঘটনা ঘটেছে সোমবার। বিজেপি বিধায়করা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরস্বতী পুজোর ওপর চরমপন্থী ইসলামিদের বিধিনিষেধ আরোপ নিয়ে আলোচনা করতে চাইছিলেন। বিজেপি তাদের মুলতুবি প্রস্তাব নিয়ে আসতে চায় কিন্তু অভিযোগ, ওই প্রস্তাব পাঠাতে দেওয়া হয়নি বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে। এর প্রতিবাদে শুভেন্দু অধিকারীসহ বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক ওয়েলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় শুভেন্দু অধিকারী তার হাতে থাকা কাগজ স্পিকারের উদ্দেশে ছুঁড়ে মারেন। এরপর, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ৪ বিজেপি বিধায়ককে ১ মাসের জন্য সাসপেন্ড করেন।
রাজ্যপালের কাছে সুকান্ত মজুমদারের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নানা তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন। বিশেষত, চিঠি পাঠানোর এই মুহূর্তে সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্ক নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। সুকান্ত মজুমদারের এই চিঠির মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি সমর্থন প্রকাশ, বা রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী অথবা তার শিবিরের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, এমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুকান্ত মজুমদার রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসেবে বিদায় নেওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) প্রতি সখ্যতার বার্তা দিতে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির অবস্থান এখন আরও শক্তিশালী হতে পারে, যদি শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য বিজেপি সভাপতির দায়িত্ব নেন।
সুকান্ত মজুমদারের চিঠির বিষয়বস্তু শুধু সাসপেনশনের প্রসঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির গতিপথ ও ভবিষ্যতেও প্রভাব ফেলতে পারে। সুকান্তের পদক্ষেপ তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে কারণ শুভেন্দু অধিকারী ও তার শিবির বিজেপির এক শক্তিশালী অংশ।
এদিকে, রাজ্যপালকে চিঠি দেওয়ার এই ঘটনাটি রাজ্য রাজনীতিতে এক নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তবে, রাজ্য বিজেপির আসন্ন নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী বা তার শিবিরের কাউকে নতুন সভাপতি হিসাবে দেখা হলে, এটা বিজেপির রাজনীতির জন্য নতুন দিগন্ত খুলতে পারে।