নিউজ ডেস্ক: অবশেষে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ঘর ছাড়া প্রায় একশ জন বিজেপি কর্মী। এদিন রাজ্যপালের কাছে ভোট পরবর্তী রাজ্যে হিংসার পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন,”ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে বিজেপির ১০ থেকে ১৫ হাজার কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সমস্ত ঘর ছাড়াদের বিভিন্ন জেলায় সেফ হোমে রাখা হয়েছে। পুলিশের থেকে কোনওরকম নিরাপত্তা পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও রাজ্যপালের কাছে অন্তত দুর্গাপুজো পর্যন্ত রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রেখে দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন শুভেন্দু।
এই বিষয় রাজ্যপাল বাংলায় বক্তব্য রেখে বলেন,” আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। আমরা বাংলাকে হিংসামুক্ত করব। আমি নেতাজির নামে লড়াই করব। আমি চাই অশান্তি বন্ধ হোক,বাঙলার মাটি পুণ্য হোক, বিরোধী দলের আক্রান্তরা রাজভবনে এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে পারবে। প্রয়োজনে পুলিশকে বদলি করা হবে।” রাজ্যপালের এই মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করবে বলে মত রাজনৈতিকমহলের।
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই রবিবার ফের রাজভবনে পৌঁছন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির হয় কড়া পুলিশি নিরাপত্তায়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা পৌঁছনর আগেই রাজভবনের সামনে লম্বা লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছিলেন আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় একশ জন আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরাই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে প্রবেশ করবেন রাজভবনে। তারপর তাঁরা শাসকদলের সন্ত্রাসের বিবরণ তুলে ধরবেন রাজ্যেপালের কাছে। বাজভবন চত্বরে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে ভেতরে প্রবেশের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। শাসক দলের সন্ত্রাসে আক্রান্তদের ছবি ঝুলতে দেখা গিয়েছে বিজেপি প্রতিনিধি দলের সদস্য গলায়। ঠিক সন্ধ্যা পৌঁনে ছটা নাগাদ শুভেন্দু আসতেই শুরু হয় ভেতরে ঢোকার তোড়জোড়। কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে রাজভবনের নর্থ গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে থাকবে আক্রান্ত বিজেপি প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা।
বৃহস্পতিবার ঘর ছাড়া বিজেপি কর্মীদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে রাজভবনে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধীদলনেতা। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় রাজবনে প্রবেশ করতে পারেনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। প্রায় এক ঘন্টা তাঁকে গাড়িতে আটকে রাখা হয়। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু।
সেই মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপির প্রতিনিধিদের দেখা করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এদিন তাঁর এজলাসে রাজ্য পুলিশকে একরকম ধমক দিয়ে পুলিশের আচরনের জবাব চান তিনি। তারপর রাজ্যপাল অনুমতি দিলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলে জানান বিচারপতি। এদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কোনও সভ্য দেশে এই এমন হয় না বলেই রাজ্য প্রশাসনকে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি।