আরজি কর মেডিকেল কলেজে (Medical College)অভয়া কাণ্ডের স্মৃতি এখনও অমলিন । গত বছরের ৯ আগস্ট সেই ভয়াবহ রাতে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ডাক্তার অভয়ার নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই ঘটনার এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও স্মৃতি টাটকা, প্রশ্নগুলো অমীমাংসিত।
এরই মধ্যে ফের মালদা আরজি করের ফাইনাল ইয়ার ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শুক্রবার রাতে মালদা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতার পরিবার প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছে। মেয়ের মুখ থেকে ট্যাবলেটের মতো কিছু বের হচ্ছিল বলে দাবি করে পরিবার পুলিশের কাছে নালিশ করেছে।
এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি মৃত্যুর খবর নয়, বরং মেডিকেল কলেজগুলোতে নিরাপত্তা ও রহস্যময় ঘটনার আরও এক উদাহরণ।মৃত ছাত্রী মালদা আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমবিবিএস-এর ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী ছিলেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে মৃতার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরে।
জানা গিয়েছে ঘটনার দিন এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে মালদায় আসেন। সেই বন্ধুর বাড়ি পুরুলিয়ায়, কিন্তু দু’জনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচিত হয়েছিলেন। পরিবারের জানানো অনুসারে, ছাত্রীটি তার প্রেমিকের সঙ্গে লুকিয়ে বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু রেজিস্ট্রি ম্যারেজের জন্য বারবার চাপ দিচ্ছিলেন।
এর ফলে দু’জনের মধ্যে ঝামেলা ও ঝগড়া হয়েছিল, এবং ছেলেটি তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিল।শুক্রবার রাতে হঠাৎ তার অবস্থা খারাপ হলে প্রেমিক তাকে মালদা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসে। হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন, এবং রাতেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারকে ফোন করা হলে তারা তাড়াহুড়ো করে মালদায় পৌঁছন।
মেয়ের মা বলেন, “মালদা মেডিকেলে গিয়ে দেখি মেয়ের মুখ দিয়ে কিছু একটা বেরোচ্ছিল। মুখের মধ্যে মনে হচ্ছিল ট্যাবলেট ছিল। আমার মনে হচ্ছে কেউ ওকে জোর করে খাইয়ে দিয়েছে। আমি যতটা জেনেছি, ওদের দু’জনের মধ্যে কোনও ঝামেলা, ঝগড়া হয়েছিল। এরপরই হয়তো জোর করে ওকে কিছু খাইয়ে দিয়েছিল। সেটা আমি কিছুই আর জানতে পারছিলাম না।
ওরা লুকিয়ে বিয়েও করেছিল। তবে মেয়ে বারবার বলেছিল রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করতে। চাপও দিয়েছিল। সেই কারণেও হয়তো কিছু করে থাকতে পারে। কারণ ওই ছেলেটি ওকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিল।” এই অভিযোগের পর শনিবার মালদা পুলিশ প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে। ছেলেটি মালদা মেডিকেল কলেজের ছাত্র, এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই ঘটনা আরজি করের অভয়া মৃত্যুর স্মৃতিকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে। গত বছর ৯ আগস্ট সেই ভয়াবহ রাতে অভয়াকে সেমিনার রুমে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তার মৃত্যুকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে চালানো হলেও পরে সত্য প্রকাশিত হয়। সেই ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়।
এক ট্রেনে কলকাতা থেকে মণিপুর: কোন রুটে চলবে, কত সময় লাগবে, স্টপেজই বা কটা?
এবং জানুয়ারি মাসে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু সেই মামলায় এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে—যেমন, কেন হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যর্থ হল? কেন পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার কথা বলা হল? তবে মালদার এই ঘটনার জল কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার।