চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার হতেই বিজেপি নেতার ভাই গ্রেফতার, তোলপাড় রাজনীতি

পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) ভগবানপুর-২ ব্লকের জুখিয়া গ্রামে এক গৃহস্থের বাড়িতে চুরি যাওয়ার ঘটনায় নাটকীয় মোড় নিল তদন্তে। ওই চুরির ঘটনায় বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতির…

stolen-items-recovered-from-bjp-leaders-brother-political-storm-erupts-in-east-midnapore

পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) ভগবানপুর-২ ব্লকের জুখিয়া গ্রামে এক গৃহস্থের বাড়িতে চুরি যাওয়ার ঘটনায় নাটকীয় মোড় নিল তদন্তে। ওই চুরির ঘটনায় বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতির ভাই জড়িয়ে পড়ায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ঘটনায় একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পাশাপাশি চুরি যাওয়া সামগ্রীও উদ্ধার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে রয়েছে সোনার গয়না, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং একটি মোটর বাইক।

ঘটনার সূত্রপাত সপ্তাহখানেক আগে। জুখিয়া গ্রামের বাসিন্দা সীতা সী জানান, তাঁদের বাড়িতে তালা ভেঙে চুরি হয় যখন পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিলেন না। পরে ফিরে এসে দেখতে পান, বাড়ির গ্রিল ভাঙা, আলমারি খোলা এবং সেখান থেকে সমস্ত সোনার গয়না ও বাড়ির একটি মোটর বাইক চুরি হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও খোয়া যায়। ঘটনায় স্থানীয় ভূপতিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

   

তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমেই চিহ্নিত করে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন হলেন বিজেপির (Purba Medinipur) স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি তপন মিদ্যার ভাই সমিরণ মিদ্যা। তার সঙ্গে ছিল সঞ্জয় মিদ্যা, শম্ভু মাইতি ও অরিন্দম শাসমল। পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে কাঁথি আদালতে পেশ করে এবং নিজেদের হেফাজতে নেয়। পরবর্তীতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চুরি যাওয়া সমস্ত সামগ্রী উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ভূপতিনগর থানার ওসি মহম্মদ মহিউদ্দিন জানান, “আমরা ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চুরি যাওয়া মোটর বাইক, একজোড়া সোনার রিং ও কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করেছি। তদন্ত চলছে। আদালতের নির্দেশ পেলে সামগ্রীগুলি ফেরত দেওয়া হবে।”

রাজনৈতিক রং নিতে শুরু করেছে চুরির ঘটনা

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) রাজনৈতিক মহল। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে। তৃণমূলের দাবি, “বিজেপি যেদিন ক্ষমতায় আসবে, সেদিনই মানুষের উপর অত্যাচার নেমে আসবে। আজ থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। চোরের দল মানুষের সেবা করতে আসছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

Advertisements

অন্যদিকে, বিজেপি নেতৃত্ব এই ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছে, “দোষ করলে সে যেই হোক, শাস্তি পাবে। বিজেপি আইন হাতে তুলে নেওয়ার দল নয়। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে দলকে দায়ী করা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়।” বিজেপির এক জেলা নেতা বলেন, “কোনও ব্যক্তি দোষ করলে, তার দায় দলের নয়। আমরা চাই, পুলিশ যথাযথ তদন্ত করুক এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।”

জনগণের মধ্যে উদ্বেগ, পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ

স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে এমন অপরাধ রোধে সহায়ক হবে।

এই ঘটনার পর জুখিয়া গ্রাম ও আশেপাশের এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিছুটা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও গ্রেফতার হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে পুলিশ।