জঙ্গলমহলের সর্বত্র মাওবাদী পোস্টার পড়ছে। তাতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে খেলা হবে হুমকি দেওয়ায় তীব্র আতঙ্কিত শাসক দল তৃণমুলের মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ ও নেতারা। আতঙ্কে আছেন বিরোধী দল বিজেপির নেতারা। চলছে নাকা চেকিং। এমন পরিস্থিতিতে আরও একবার চর্চায় টিপু সুলতান। তাকে ঘিরে সন্দেহের মেঘ ঘনাচ্ছে বীরভূম জেলা পুলিশ (Birbhum) ও আই বি অফিসারের মধ্যে।
কে এই টিপু সুলতান? ২০১৯ সালে মাওবাদী সংগঠক সন্দেহে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল৷ পরে জামিনে ছাড়া পায় টিপু। তার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মাওবাদী সংগঠকদের যোগাযোগ আছে এমন সন্দেহে ফের পুলিশের ঘেরাটোপে শান্তিনিকেতনের গুরুপল্লির বাসিন্দা টিপু সুলতান।
টিপু সুলতানের গতিবিধি সন্দেহজনক বলে মনে করছেন বীরভূম জেলা পুলিশ কর্তারা। জঙ্গলমহলে নতুন করে মাওবাদী আতঙ্ক ছড়াতেই তাকে ফের আটক করল স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের একেবারে নাকের ডগায় থাকা টিপু সুলতান কি মাওবাদী নেতা? এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনও উত্তর নেই এসটিএফ বা জেলা পুলিশের কাছে। তবে টিপু সন্দেহের তালিকায় ছিল, এখনও আছে এমনই জানাচ্ছে জেলা পুলিশ।
তাৎপর্যপূর্ণ, বাংলাদেশের বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সে দেশের সাংসদ সামিম ওসমানের ‘খেলা হবে’ রাজনৈতিক হুঙ্কার ধার করে বীরভূম জেলা টিএমসি সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বিধানসভা ভোটের আগে বলেন ‘খেলা হবে, ভয়ঙ্কর খেলা হবে’। এই রাজনৈতিক হুমকি বার্তা এখন জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন গ্রামে মাওবাদী নামে পোস্টারে থাকছে। খেলা হবে দাবি করা পোস্টারগুলো আদৌ মাওবাদীদের কিনা তা নিয়ে আইবি কর্তারা দ্বিধায়। তবে সতর্কতা মেনে টানা ১৫ দিন নাকা চেকিং চলছে।
আইবি ও বীরভূম জেলা পুলিশের আশঙ্কা এই জেলাতে মাওবাদীরা সংগঠন বাড়িয়েছে। তাই মাওবাদী সন্দেহে ফের আটক করা হয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র টিপু সুলতানকে। টিএমসি জেলা সভাপতি অনুব্রতর নাকের ডগায় মাওবাদী সন্দেহভাজন টিপু সুলতান কে নিয়ে এলাকা সরগরম। বোলপুরেই নিবাস অনুব্রত মণ্ডলের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকেন অনুব্রত মণ্ডল। তারই এলাকায় টিপু সুলতানকে নিয়ে চর্চা চলছে।
তবে এখন বোলপুরে নেই অনুব্রত মণ্ডল। গোরু পাচার মামলায় সিবিআই জেরার মুখে অসুস্থ হয়ে কলকাতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে এখন সেখানেই নিজের ফ্ল্যাটে আছেন। অসুস্থতা দেখিয়ে বারবার জেরা এড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ।
এমন দাপুটে অনুব্রতর ঘরের কাছে টিপু সুলতানের মতো সন্দেহভাজন মাওবাদী কে নিয়ে চিন্তিত জেলা প্রশাসন। জানা গিয়েছে, গত বছর ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ UAPA আইনে তাকে গ্রেফতার করেছিল। এবার মাওবাদী সন্দেহে তাতে ফের আটক করা হলো।