নবান্নের (Nabanna) নতুন উদ্যোগের আওতায় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নজরদারি আরও উন্নত হতে চলেছে। ডিজি কন্ট্রোল রুমের পাশে তৈরি হওয়া বিশেষ মনিটরিং (Monitoring) সেলের (cell) মাধ্যমে এখন থেকে সারা বাংলার সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজ সরাসরি ট্র্যাক করা যাবে। সেলটির উদ্দেশ্য একটাই—রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি (Surveillance) আরও উন্নত করা এবং অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।
এই উদ্যোগ মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ ও নবান্নের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা একত্রিত হয়ে কাজ শুরু করেছেন। জানা গেছে, নবান্নের ডিজি কন্ট্রোল রুমে যে মনিটরিং সেল তৈরি হচ্ছে, তা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই চালু করা হবে। এর মাধ্যমে শুধু শহর নয়, গ্রামীণ এলাকা থেকেও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং মনিটর করা সম্ভব হবে। ফলে রাজ্যের কোথাও কোনও গোলমাল বা দুর্ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে এবং তদন্তের কাজে ফুটেজ ব্যবহার করা হবে।
এখন পর্যন্ত রাজ্য পুলিশের কর্তারা জেলা পুলিশকে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দিতেন। এই ফুটেজগুলি পরে ঘটনার তদন্তের কাজে ব্যবহৃত হতো। তবে, নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে নবান্ন থেকে সরাসরি নজরদারি করা হবে, যা আরও দ্রুত এবং কার্যকরীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ করে দেবে। পুলিশ ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা আশা করছেন, এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রিত হবে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দ্রুত সমাধান হবে।
এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য হলো সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে দ্রুত অপরাধ চিহ্নিত করা, যাতে সেগুলির উপর প্রমাণ হিসেবে ভিত্তি করে তদন্ত এগিয়ে নেয়া যায়। এর পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের কাজে যদি কোনও সমস্যা হয়, তবে তা দ্রুত সমাধান করা হবে। বিশেষত, অনেক গ্রামীণ এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরার সমস্যা রয়েছে, যেখানে ক্যামেরা খারাপ হয়ে পড়েছে বা এখনও সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, এই সমস্যা সমাধান করতে হলে আগে সিসিটিভি ক্যামেরার অবস্থা নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট খতিয়ান তৈরি করতে হবে। এই খতিয়ান অনুযায়ী, সঠিক জায়গায় নতুন ক্যামেরা স্থাপন এবং পুরনো ক্যামেরাগুলি মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরার অভাব রয়েছে। সেসব জায়গায় ক্যামেরা স্থাপন করার পাশাপাশি, বেশ কিছু পুরনো ক্যামেরাকে পুনরায় কার্যকরী করে তোলা হবে। রাজ্য পুলিশ এই খতিয়ান তৈরি এবং ক্যামেরা মেরামতসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাবে।
এটি রাজ্য পুলিশের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ, যার ফলে তাদের কাজ আরও সহজ এবং ফলপ্রসূ হবে। মনিটরিং সেলের মাধ্যমে তারা আরও তৎপরভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং পুলিশকে আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবে। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে ঘটনার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে, এবং রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।
এছাড়া, এই মনিটরিং সেল চালু হলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও নিরাপত্তা বিষয়ে আশ্বাস এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। রাজ্য পুলিশের এই উদ্যোগ অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং রাজ্যের জনগণের জন্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।