মাসদেড়েক আগেই রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে বৈঠকে ডিভিসি (DVC) (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন)-র চেয়ারপার্সন সুরেশ কুমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বর্ষার মরসুমে রাজ্যের অনুরোধ অনুযায়ী তারা একবারে ৫০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়বে না। তবে তখনই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বর্ষার শেষভাগে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা কঠিন হতে পারে।(DVC)
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বর্ষার শুরুতেই DVC(DVC) রাজ্যকে না জানিয়েই অনেক বেশি জল ছাড়তে শুরু করেছে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে রাজ্য সরকার। আর সেই কারণেই ফের রাজ্য ও DVC-র মধ্যে টানাপোড়েন চরমে উঠেছে।(DVC)
মুখ্যসচিবের নির্দেশে কড়া চিঠি
পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সেচসচিব মণীশ জৈনকে নির্দেশ দেন—ডিভিসির উদ্দেশে কড়া চিঠি পাঠাতে। চিঠির মূল উদ্দেশ্য, আগাম না জানিয়ে জল ছাড়ার তীব্র প্রতিবাদ জানানো। অভিযোগ অনুযায়ী, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়েছে ৪৯ হাজার কিউসেক হারে, আর দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হয়েছে প্রায় ৬৭ হাজার কিউসেক জল।
এই হঠাৎ জল ছাড়ার ফলে পশ্চিম বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলির (DVC) একাধিক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এর মাঝেই আবহাওয়া দপ্তর সোমবার থেকে ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। ফলে রাজ্য প্রশাসনের আশঙ্কা, আগামী সপ্তাহের শুরুতেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
আইন অনুযায়ী রাজ্যকে জানানো বাধ্যতামূলক
প্রসঙ্গত, জল ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারকে আগাম জানানো বাধ্যতামূলক—এমন নিয়ম রয়েছে। শুধু তাই নয়, DVC বোর্ডে রাজ্যের প্রতিনিধি থাকার কথাও আইনি কাঠামো অনুযায়ী নির্ধারিত। অথচ, বারবার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করছে DVC বলে অভিযোগ। এমনকি, গত বছর সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকার দুই প্রতিনিধিকে DVC বোর্ড থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল অতিরিক্ত জল ছাড়ার প্রসঙ্গে মতবিরোধের কারণে(DVC)
আগের বৈঠকে প্রতিশ্রুতি ছিল নিয়ন্ত্রণের
এই বছরের ২৯ মে রাজ্যের সেচ ও জল সম্পদ দপ্তর, আবহাওয়া দপ্তর, (DVC) কেন্দ্রীয় জল কমিশন, ফরাক্কা ব্যারাজ প্রজেক্ট অথরিটি ও DVC-র মধ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ছিলেন DVC-র চেয়ারপার্সন সুরেশ কুমারও। বৈঠকে রাজ্য স্পষ্ট অনুরোধ জানায়, যেন এককালীন জল ছাড়ার পরিমাণ ৫০ হাজার কিউসেকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। সুরেশ কুমার তখন জানান, “আমরা চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। কিন্তু যদি শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়, তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হতে পারে।”(DVC)
প্রশ্ন উঠছে DVC-র উদ্দেশ্য নিয়ে
তবে এবার DVC মরসুমের শুরুতেই সেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল—বারবার রাজ্যকে না জানিয়ে কেন জল ছাড়া হচ্ছে? এটি কি কৌশলগত ব্যর্থতা, না কি পরিকল্পনার অভাব? অনেকে আবার উলটো প্রশ্ন তুলছেন—রাজ্য সরকার কি সত্যিই না জানত জল ছাড়া হচ্ছে?(DVC)
আপাতত পরিস্থিতির জটিলতা আরও বাড়াতে চলেছে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসন চাইছে, কেন্দ্র এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুক এবং DVC-কে নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য করুক।